সাংবাদিক মিজানুর রহমান সোহেলকে রাতভর আটকে রেখে আজ তাকে আবার সসম্মানে বাসায় দিয়ে আসেন ডিবি সদস্যরা
আজ ১৯ নভেম্বর রোজ বুধবার দুপুরে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে এমনটি জানান সাংবাদিক মিজানুর রহমান সোহেল।
তিনি পোস্টে লিখেন, “আলহামদুলিল্লাহ। বিনা অপরাধে প্রায় সাড়ে ১০ ঘণ্টা ডিবি হেফাজতে থাকার পর তারা আমাকে স্বসম্মানে মাত্র বাসায় পৌঁছে দিয়েছে।” তিনি আরও জানান, “সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে একটা ব্যবসায়ী কথা বললে সরকার ভয় পায় কেন? শুধুমাত্র প্রেস কনফারেন্স বন্ধ করতেই আমাকে কি গভীর রাতে জোর করে তুলে নিতে হলো? যারা মুখে ‘বাকস্বাধীনতা’র বুলি আওড়ান, তারাই কি আমাকে বাকরুদ্ধ করতে এই আয়োজন করলেন? মগের মুল্লুকে এই কি তবে মানুষের বাকস্বাধীনতার বাস্তব চিত্র?
আমাকে আটক করার ঘটনা জানাজানি হতেই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন বহু শুভাকাঙ্ক্ষী, ভাই, বন্ধু, সহকর্মীরা। অনেকেই আমার খবর নিয়েছেন, সোশ্যাল মিডিয়াতে স্ট্যাটাস দিয়েছেন, বিবৃতি দিয়েছেন ও সংবাদও প্রকাশ করেছেন। তাদের এই সমর্থন ও আওয়াজের কারণেই আমি দ্রুত মুক্তি পেয়েছি বলে বিশ্বাস করি। যারা আমার পাশে ছিলেন তাদের সবার প্রতি আমার অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা।”
তিনি আরও লিখেন, “আমার সঙ্গে গত রাত ১২টার দিকে ডিবি প্রধান কথা বলবেন, এই অজুহাত দেখিয়ে ৫/৬ জন ডিবি সদস্য আমাকে জোর করে বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায়। ডিবিতে নিয়ে আমার নাম লেখা হয় আসামীর খাতায় । আমাকে জুতা-বেল্ট খুলে রেখে গারদে আসামীদের সাথে রাখা হয়। কিন্তু আমাকে কেন আটক করা হলো? সেটা আমি যেমন জানতাম না, তেমনি যারা আমাকে তুলে এনেছিলেন বা ডিবির উর্দ্ধতন কর্মকর্তারাও এই বিষয়ে কিছু বলতে পারেননি। দীর্ঘ সময় পর বুঝতে পারলাম, সরকারের একজন উপদেষ্টার ইশারায় শুধুমাত্র ৯ জন মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীকে মনোপলি ব্যবসা করার সুযোগ দেয়ার জন্যই আটক করা হয়েছিল আমাকে। আমার সাথে আটক করা হয় সংগঠনের সেক্রেটারি আবু সাঈদ পিয়াসকেও । তিনি এখনও ডিবি কার্যালয়ে আছেন।
আজ (বুধবার) ন্যাশনাল ইক্যুইপমেন্ট আইডেন্টিফিকেশন রেজিস্টার (এনইআইআর) নিয়ে ডিআরইউতে মোবাইল হ্যান্ডসেট ব্যবসায়ীদের সংগঠন বিজনেস কমিউনিটি বাংলাদেশ (এমবিসিবি)-এর প্রেস কনফারেন্স করার কথা ছিল। আমি সেখানে ছিলাম মিডিয়া পরামর্শক। সেই প্রেস কনফারেন্স বন্ধ করাই তাদের প্রধান টার্গেট ছিল। কিন্তু তাদের জন্য আফসোস, যে উদ্দেশ্যে তারা প্রেস কনফারেন্স বন্ধ করতে চাইলো সেটা দেশের সবাই জেনে গেলো।“
মিজানুর রহমান সোহেল জানান, “দেশের মুক্ত বাণিজ্য নীতির সঙ্গে এনইআইআর স্পষ্টতই সাংঘর্ষিক। প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করতে দেশে প্রতিযোগিতা কমিশনও রয়েছে। অথচ মাত্র ৯ জন ব্যবসায়ীকে সুবিধা দিতে সারাদেশে ২৫ হাজার মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীকে পথে বসানোর গভীর চক্রান্ত চলছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে গ্রামের সাধারণ মানুষ, প্রবাসীসহ অনেকেই বিপদে পড়বেন। একটা চেইন ভেঙ্গে পড়বে। অনেক ব্যবসায়ী পথে বসে যাবে। জেনে রাখা ভালো, এই ৯ জনের একজন ওই উপদেষ্টার স্কুল-বন্ধু।“

