এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন যে দারসারাভাবে চলছে তা প্রকটভাবে ফুটে উঠছে পুনর্নিরীক্ষণের ফলাফলে। প্রতি বছরই ফেল থেকে জিপিএ-৫ পাওয়ার ঘটনা ঘটছে। এবারের এইচএসসি ও সমমানের ফলাফলের খাতা পুনর্নিরীক্ষণে যশোর বোর্ডের একজন শিক্ষার্থী ফেল থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছেন। ২০২৪ সালেও একজন শিক্ষার্থী ফেল থেকে জিপিএ-৫ পান। ২০২৩ সালে এই সংখ্যা ছিল এক। অন্যদিকে চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফলে ফেল করা তিন শিক্ষা বোর্ডের ২০ শিক্ষার্থী খাতা পুনর্নিরীক্ষণে জিপিএ-৫ পান। এতে প্রশ্ন উঠেছে পাবলিক পরীক্ষায় খাতা মূল্যায়নের ব্যবস্থাপনা নিয়ে। দায়িত্বে অবহেলা ও গাফিলতির মুখে পড়েছেন পরীক্ষকদের পাশাপাশি খাতা নিরীক্ষক ও প্রধান পরীক্ষকরাও। একজন পরীক্ষক খাতা পরীক্ষার পর তা নিরীক্ষা করেন সংশ্লিষ্ট বিষয়ের আরেক জন শিক্ষক। এরপর তা জমা দেওয়া হয় প্রধান পরীক্ষকের কাছে। তারও এটি নিরীক্ষা করার নিয়ম রয়েছে। এভাবে কয়েক স্তরে পরীক্ষানিরীক্ষার পর ফল তৈরি করা হয়। কিন্তু এসবই যেন দায়সারাভাবে চলছে।
বর্তমানের নিয়ম অনুসারে, খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন করা শিক্ষার্থীর উত্তরপত্রে দেখা হয় চারটি দিক । সেগুলো হলো সব প্রশ্নের সঠিকভাবে নম্বর উত্তরপত্রে দেওয়া হয়েছে কি না, প্রাপ্ত নম্বর গণনা সঠিক আছে কি না, প্রাপ্ত নম্বর ওএমআর শিটে উঠানো হয়েছে কি না এবং প্রাপ্ত নম্বর অনুযায়ী ওএমআর শিটের বৃত্ত ভরাট করা হয়েছে কি না। এ চার জায়গায় কোনো ভুল থাকলে তা সংশোধন করে নতুন করে ফল প্রকাশ করা হয়। নতুন করে নম্বর দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। শিক্ষাবিদরা বলেন, পুনর্নিরীক্ষণ নয়, খাতা যদি পুনর্মূল্যায়ন করা হয়, তাহলে আরো ভুল বের হয়ে আসত।
এদিকে সারা দেশে ২০২৫ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার খাতা চ্যালেঞ্জে বড় ধরনের ফল পরিবর্তনের ঘটনা সামনে এসেছে। শিক্ষার্থীদের আবেদনের ভিত্তিতে পুনর্নিরীক্ষণ করে গত রবিবার প্রকাশ করা হয়েছে পরিক্ষার ফল। এতে নতুন করে ৫৫৫ শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছেন , আর ১ হাজার ৪৭৯ জন ফেল থেকে পাশ করেছেন। ঢাকা বোর্ডে সবচেয়ে বেশি পরিবর্তন ঘটেছে ।

