আজ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে গণভোটের বিষয়ে বিএনপি মতামত দিয়েছে । তারা জাতীয় নির্বাচনের আগে আর কোনো নির্বাচন চান না বলেও জানান।
আজ ৮ অক্টোবর রোজ বুধবার ফরেন সার্ভিস একাডেমির মিলনায়তনে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে গণভোট বাস্তবায়নের প্রক্রিয়ার বিষয়ে এসব কথা বলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদ।

এই গণভোট কবে হতে পারে সেই পরামর্শ দিয়ে সালাহ উদ্দিন বলেন,
“সামনে যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, ইনশাল্লাহ সেই নির্বাচনের আগে। আমাদের সময় আছে, নির্বাচনের সময়টাও যদি ধরি, তাও সাড়ে তিন মাস- নভেম্বর, ডিসেম্বর, জানুয়ারি এবং ফেব্রুয়ারি মাস। কারণ অক্টোবরের আমরা এখন প্রায় সেকেন্ড হাফের দিকে আছি। এই সময়ের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের তফসিলটা ঘোষণা হবে। তাহলে আমাদের হাতে সময় থাকে এক থেকে দেড় মাস। এখন বাস্তবতা কি এবং প্রয়োজনীয়তাটা কি জুলাই জাতীয় সনদের পক্ষে জনগণের মতামত যদি আসে। আমরা মনে করি আসবে ইনশাআল্লাহ। সুতরাং আমরা অনুমান করতে পারি যে জনগণ সংস্কার চায়, সব রাজনৈতিক দল সংস্কার চায়, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন চায়।”
জুলাই জাতীয় সনদ নিয়ে তিনি বলেন,
“জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তি যদি রচনা করতে চাই, সেটা তো সেমিলটেনিয়াস ইলেকশনের মধ্যে হতে পারে। এইজন্যই তো আমরা আইনগত ভিত্তি মনে করছি এবং জনগণের সম্মতি এটা। একটা বিশাল নির্বাচনী আয়োজনের মধ্যে যেটা আছি সেরকম আরেকটি আয়োজন যদি তার আগে করি এটা নির্বাচনকে বিলম্বিত করার মত একটা প্রয়াস হবে বলে আমরা মনে করি। সুতরাং এটাকে আমরা পরিহার করি, জাতীয় স্বার্থে আমরা আমাদের রাজনৈতিক স্বার্থ থেকে ঊর্ধ্বে উঠে জাতীয় স্বার্থ এবং দেশের স্বার্থকে বড় করে দেখি। আরেকটা বিশাল আয়োজন, একটা বিশাল অর্থনৈতিক সংশ্লিষ্টতা এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সংশ্লিষ্টতা এগুলো সবকিছু আমরা পরিহার করতে পারব, যদি একই দিনে নির্বাচনের সময় আমরা এই গণভোটের আয়োজনটা করি, শুধু আরেকটা ব্যালট লাগবে। আমরা একাধিক ব্যালেটে ভোট দিতে অভ্যস্ত, স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোর মতো এখানে কোনো জটিলতা হবে না।”
সালাহ উদ্দিন আহমদ বলেন,
“জুলাই সনদ গৃহীত হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সময়টা সংসদের জন্য স্বাধীনতা থাকতে হবে। সেই পার্লামেন্টে এই সনদগুলো গৃহীত হওয়ার পরে আমরা দ্বিতীয় পক্ষ গঠন করবো কিনা? অবশ্যই গঠন করতে হবে। যখন এই সনদটা গৃহীত হয়ে গেল, সংবিধান সংশোধনী হয়ে গেল, তার ভিত্তিতে তো সেকেন্ড হাউস করাই যাবে এবং সেজন্য আইন প্রণীত হবে, সেজন্য যেভাবে নোট অফ ডিসেন্টে যারা যেভাবে দিয়েছেন তারা যদি সেভাবে সংবিধান সংশোধনী করার সুযোগ পান তাহলে সেভাবে হবে।”
বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন,
“জুলাই সনদ প্রণয়ন প্রক্রিয়া ইট ইজ ওভার, ইট ইজ ক্লোজড চ্যাপ্টার। এটা আমরা যে যেভাবে সম্মত হয়েছি, সেটা আমরা আলোচনায় আসি, বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে আমরা এখানেই থাকি, আদারওয়াইজ আমাদের জন্য একটু অসুবিধা হতে পারে।”
জুলাই সনদ এটা একটা টোটাল প্যাকেজ উল্লেখ করে তিনি বলেন,
“জুলাই সনদে এখানে এগ্রিড হয়েছি উইথ নোট অফ ডিসেন্ট ইন সার্টেন পয়েন্ট এবং সেখানে বর্ণিত আছে কি, কীভাবে নোট অফ ডিসেন্ট বাস্তবায়ন হবে। আমরা বলেছি আমরা যে যেভাবে নোট অফ ডিসেন্ট দিয়েছি, সেটা বিবৃতি থাকতে হবে এবং অঙ্গীকারনামায় একটা দফাযুক্ত থাকতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনী ইশতেহারে সেগুলো উল্লেখপূর্বক যদি জনগণের ম্যান্ডেট প্রাপ্ত হয়, তারা সে মতে ব্যবস্থা নিতে পারবেন। জুলাই সনদ এটা একটা টোটাল প্যাকেজ। এই প্যাকেজ ইন টোটালিটি জুলাই সনদের অন্তর্ভুক্ত থাকবে এবং গণভোটের জন্য যাবে।”
আগামীতে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করা নিয়ে সালাহউদ্দিন বলেন,
“জুলাই সনদ আদেশটা প্রজ্ঞাপন আকারে গ্যাজেট নোটিফিকেশনে যাবে এবং সেই প্রজ্ঞাপনের সূত্র ধরে যে গণভোটের আইনটা হবে সেই গণভোটের আইনটা সেভাবে উল্লেখ থাকবে। যে এই বিষয়ে এই প্রজ্ঞাপনে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য জনগণের সম্মতি নেওয়া প্রয়োজন বিধায়, যেহেতু অংশে সেটা দিয়ে সেহেতু এই গণভোট অধ্যাদেশ জারি করা হলো এবং এই গণভোটটা কীভাবে পরিচালিত হবে, সেটার জন্য বিধিবিধান বিদ্যমান গণভোট আইন থেকে নেওয়া যায় আরপিও থেকে নেওয়া যায়। যেভাবে নির্বাচন কমিশনে ভোট পরিচালনা করে সে সমস্ত বিধিবিধানগুলো প্রয়োজনে সরকার ইলেকশন কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করে বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা সেখানে দেওয়া হবে এবং সেই আদেশের মধ্যে জুলাই সনদ আদেশ যেটা প্রজ্ঞাপনের মধ্যে করবেন সেখানেও গণভোটের বিধান কথাটা উল্লেখ থাকা শ্রেয় হবে। যে প্রজ্ঞাপন এই আদেশটা বাস্তবায়নের জন্য গণভোটের আয়োজন করা হবে, সেটাও আদেশের মধ্যে সংযুক্ত করতে পারেন।”
সবশেষে তিনি বলেন,
“যদি আমরা ধরে নেই তাহলে পরে সেই গণভোটটা আগে হলো। যে ফলাফল একই দিনে হলেও সে একই ফলাফল দুটোই বাইন্ডিং ক্ষমতা থাকছে, সার্বভৌম ক্ষমতার অনুবলে পার্লামেন্টের উপরে, তাহলে আগে আরেকটা নির্বাচনের আয়োজন করা এই জাতির পক্ষে এ সময়ের মধ্যে কি সম্ভব? অথবা প্রয়োজন কি আছে? এই দুই প্রশ্নের একটা হচ্ছে- সম্ভাবনা আমরা দেখি না। কারণ এই সময়ের মধ্যে আরেকটা মহাযোগ্য জাতীয় সংসদের মত একই আয়োজনটা করতে হবে, শুধু ওইখানে প্রার্থী থাকবে না, সনদেই হবে প্রার্থী।”
Tasin/Digital Khobor

