খুলনা থেকে চিলাহাটিগামী সীমান্ত এক্সপ্রেস ট্রেনে ঘটেছে এক অভিনব ও নাটকীয় ঘটনা । মা-মেয়েকে চেতনানাশক জুস পান করিয়ে তাদের সর্বস্ব লুটের চেষ্টাকালে ফুল মিয়া (৫৫) নামে এক প্রতারক অন্য যাত্রীদের কাছে হাতে নাতে ধরা পড়েন।
সেখানকার যাত্রীরা জানান, তারা ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে তাকে ফুল মিয়াকে তার নিজের জুস পান করতে বাধ্য করলে ফুল মিয়া নিজেই অজ্ঞান হয়ে লুটিয়ে পড়ে।
আজ ৩০শে আগস্ট শনিবার ভোরে এই ঘটনাটি ঘটে। ঘটনার পর সৈয়দপুর রেলওয়ে পুলিশ খবর পেয়ে ভুক্তভোগী মা-মেয়েসহ অজ্ঞান পার্টির ওই সদস্যকে উদ্ধার করে সৈয়দপুর রেলওয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রেলওয়ে পুলিশ ও ট্রেনের যাত্রীরা এই বিষয়ে জানায়, ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার কৌশিলা রায় (৫০) ও তার মেয়ে বীথি রানী (২৮) দিনাজপুর থেকে সৈয়দপুরে আসছিলেন। অজ্ঞান পার্টির সদস্য রংপুরের মিঠাপুকুর এলাকার ফুল মিয়া ‘সীমান্ত এক্সপ্রেস’ ট্রেনের একই বগিতে তাদের পাশের আসনেই বসা ছিলেন ।
আলাপ আলোচনার এক পর্যায়ে সে ওই মা-মেয়েকে জুস পান করতে দেয়। জুস পানের কিছুক্ষণের মধ্যেই মা ও মেয়ে দুজন অজ্ঞান হয়ে পড়লে ফুল মিয়া তাদের কানের দুল ও নাকের ফুল খুলে নেওয়ার চেষ্টা চালায়। এ সময় সন্দেহ প্রকাশ করেন তাদের পাশের আসনে থাকা আব্দুর রহিম নামে একজন অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা। তিনি বিষয়টি আঁচ করতে পেরে সঙ্গে সঙ্গে হাতেনাতে আটক করেন ফুল মিয়াকে এবং বগির অন্য যাত্রীদের সহায়তায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। ফুল মিয়া প্রথমে অভিযোগ অস্বীকার করলেও তার কথায় অসংলগ্নতা পাওয়ায় যাত্রীরা তার সঙ্গে থাকা জুসের বোতল থেকে তাকে বাধ্য করে জুস পান করার জন্য। ফুল মিয়া জুস পান করে কয়েক মিনিটের মধ্যেই অজ্ঞান হয়ে ট্রেনের মেঝেতে লুটিয়ে পড়লে পুরো বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যায়।
সাথে সাথে ট্রেনে কর্তব্যরত রেলওয়ে পুলিশকে খবর দেওয়া হলে সৈয়দপুর স্টেশনে ট্রেনটি পৌঁছানোর পর তারা তিনজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। সৈয়দপুর রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদ-উন নবী এই বিষয়ে জানান, “ভুক্তভোগী এবং অভিযুক্ত তিনজনই বর্তমানে সৈয়দপুর রেলওয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাদের কারো জ্ঞান এখনো ফেরেনি। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর পরিবারের পক্ষ থেকে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।আটক ফুল মিয়া একজন পেশাদার অপরাধী এবং তার নামে দেশের বিভিন্ন রেলওয়ে থানায় অজ্ঞান করে লুটপাটের একাধিক মামলা রয়েছে।”
Tasin/Digital Khobor
