পাঁচ দফা দাবি জানিয়ে এর দ্বিতীয় ধাপে আরও ১২ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।
আজ ৩০ সেপ্টেম্বর রোজ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় রাজধানীর পল্টনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা করা হয় এ কর্মসূচি ।
দলের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমাদ এই সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলেন,
“দেশের এতগুলো রাজনৈতিক সংগঠন ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করার পরও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। কেমন যেন স্বৈরতান্ত্রিক সরকারগুলোর মতো এই সরকারও জনতার দাবির প্রতি উদাসীনতা প্রদর্শন করছে। এই সরকার একমাত্র জনতার রক্তমাখা-জীবন উৎসর্গ করা অভিপ্রায়ে গঠিত। ফলে জনতার দাবির প্রতি ক্রমাগত উপেক্ষা এই সরকারের নৈতিক ও আইনগত বৈধতাকে নষ্ট করবে।”
আন্দোলনের প্রেক্ষাপট বর্ণনা করে তিনি বলেন,
“জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন ইস্যুতে আমরা সরকারকে সর্বাত্মক সহায়তা করেছি। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে দীর্ঘ আলাপচারিতায় অংশ নিয়েছি। কিন্তু দুঃখজনক বাস্তবতা হলো, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রধান চাওয়া স্বৈরতন্ত্রের স্থায়ী বিলোপ পূরণে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিশ্চিত করা যায়নি। জুলাই সনদে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ঐকমত্য হয়নি। যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে সেগুলোর আইনি ভিত্তি নিয়ে টানাপোড়েন এখনও শেষ হয়নি।”
ফ্যাসিবাদের সাথে জড়িতদের বিচারে ধীরগতি ও স্বল্পমাত্রা জনগণের মাঝে হতাশা তৈরি করেছে উল্লেখ করে অধ্যক্ষ ইউনুস আহমাদ বলেন,
“পুলিশের হিসাবমতেই ফ্যাসিবাদে জড়িত আটক ব্যক্তিদের ৭৩ শতাংশ জামিন পেয়ে যাচ্ছে। ফ্যাসিবাদের দোসররা মহাসমারোহে নির্বাচন করার ঘোষণা দিচ্ছে। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির কোনো প্রচেষ্টাই দৃশ্যমান না, বরং সরকার শীর্ষস্থান থেকে নির্বাচনের আগেই ফলাফল নিয়ে বার্তা দেওয়ার এক ধরনের নগ্ন প্রচেষ্টা দেখা গেলো জাতিসংঘের বৈঠক যাত্রায়।”
৫ দফা দাবির বিষয়ে তিনি আরও বলেন,
“এ অবস্থায় ৫ দফা দাবি আদায়ে আন্দোলনের দ্বিতীয় ধাপে আমাদের কর্মসূচি হচ্ছে— ১ অক্টোবর থেকে ৯ অক্টোবর পর্যন্ত ৫ দফা গণদাবির পক্ষে জনমত গঠনের লক্ষ্যে গণসংযোগ। ১০ অক্টোবর ঢাকায় ও বিভাগীয় শহরে গণমিছিল এবং ১২ অক্টোবর সব জেলায় জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান।”
যুগপৎ আন্দোলনের পাঁচ দাবি নিচে উল্লেখ করা হলোঃ
১. জুলাই সনদের ভিত্তিতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে হবে।
২. নির্বাচন পিআর পদ্ধতিতে হতে হবে।
৩. সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে।
৪. গণহত্যার বিচার দৃশ্যমান হতে হবে।
৫. বিশেষ ট্রাইব্যুনালে ভারতীয় তাবেদার ও ফ্যাসিবাদের দোসর জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের বিচার করতে হবে এবং বিচার চলাকালীন তাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও দলের মুখপাত্র মাওলানা গাজী আতাউর রহমান সাংবাদিকদের ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন দলের সহকারী মহাসচিব মাওলানা আহমাদ আবদুল কাইয়ুম, কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক মাওলানা লোকমান হোসাইন জাফরী, মহিলা ও পরিবার কল্যাণ সম্পাদক এবিএম জাকারিয়া, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) মুফতি মোস্তফা কামাল এবং কেন্দ্রীয় সহ-প্রচার ও দাওয়াহ সম্পাদক মাওলানা কেএম শরীয়াতুল্লাহ ।