জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেছেন, আসন্ন নির্বাচনে এনসিপি পুরোপুরি সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। তবে নির্বাচনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো, বিশেষ করে গণভোটের রূপরেখা নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) দ্রুত প্রকাশ করতে হবে। তিনি ইসির স্বতন্ত্রতা, নারী ভোটারদের নিরাপত্তা এবং প্রবাসী ভোটারদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন।
আজ ১৯ নভেম্বর রোজ বুধবার নির্বাচন কমিশনের সংলাপে অংশগ্রহণ করে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী এসব কথা বলেন ।
আসন্ন নির্বাচনে গণভোট পরিচালনার বিষয়টি একটি বড় বিষয় হিসেবে তুলে ধরেন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। তিনি বলেন, গণভোট কীভাবে পরিচালিত হবে, এটি কবে বাস্তবায়ন করা হবে এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ– প্রতারণা প্রতিরোধের জন্য কোনো সুনির্দিষ্ট নীতিমালা নেওয়া হয়েছে কি না নির্বাচন কমিশনকে দ্রুত এগুলো প্রকাশ করতে হবে।
তিনি জানান, কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী এনসিপি প্রস্তুতি নেবে এবং প্রয়োজনে সব সহযোগিতা দেবে।
এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নির্বাচন কমিশনের (ইসি) স্বতন্ত্রতা অক্ষুণ্ণ রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন,কমিশন যদি সব রাজনৈতিক দল থেকে সম্পূর্ণরুপে স্বাধীন থাকে, তবে এনসিপি ১০০ শতাংশ সহযোগিতা প্রদান করবে। আমরা অন্যান্য সহযোগী দলকেও আহ্বান জানাচ্ছি কো-অপারেশন মোডে আসার জন্য।
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী সেখানে নারী ভোটারদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে এবং তাদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য একটি মনিটরিং সেল গঠনের প্রস্তাব দেন । তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, নারীরা ইলেকশনের সময় সাইবার হ্যারাসমেন্টের শিকার হতে পারেন, তাই এই বিষয়ে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রয়োজন।
তরুণ ভোটারদের নির্বাচনে উৎসাহিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সক্রিয় করার পরামর্শ দেন এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক। তিনি মনে করেন, এতে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার গণতান্ত্রিক সম্মান বজায় থাকবে এবং তরুণরা ভুল পথে চালিত হবে না, যা দেশের জন্য ইতিবাচক হবে।
প্রবাসী ভোটারদের অংশগ্রহণ প্রক্রিয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, তাদের জন্য সময় সীমিত। যদি প্রক্রিয়া আগে থেকে চালু করা হয়, তাহলে অংশগ্রহণ বাড়বে, যা ভোটার সংখ্যা ও নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি করবে।
তিনি নির্বাচনের প্রতীক ও প্রার্থীর স্বতন্ত্র পরিচয় নিশ্চিত করার গুরুত্বে জোর দেন। তার মতে, প্রতীক একজন প্রার্থীর পরিচয়, যা ভোটারদের জন্য স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে।
যোগাযোগ ব্যবস্থার বিষয়ে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী প্রস্তাব করেন, প্রতিটি রাজনৈতিক দলের জন্য একজন অফিসার ট্যাগ করা হলে দলের উদ্বেগ ও কনসার্ন সহজভাবে জানানো সম্ভব হবে।
নতুন ভোটারদের (১৮ বছর পূর্ণ হওয়া) বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি জানান, নির্বাচনের দিন যাদের বয়স ১৮ হবে, তাদের ভোটারের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করার ব্যবস্থা ইতোমধ্যে নেওয়া হয়েছে।
এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক বলেন, দীর্ঘ সময় পরে বাংলাদেশে একটি সুযোগ এসেছে, যেখানে প্রার্থীরা নিজস্ব প্রতীকে ভোটে অংশগ্রহণ করে তাদের পরিচয় প্রদর্শন করতে পারবে। তিনি সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে ইসির নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করার এবং নির্বাচনের সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করতে সব সহযোগিতা দেওয়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।

