জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম মন্তব্য করেছেন, “সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করা সরকারের নৈতিক-আইনি দায়িত্ব”
আজ ১৬ সেপ্টেম্বর রোজ মঙ্গলবার ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য না দিয়ে বের হয়ে এসে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন ।
নাহিদ ইসলাম এই বিষয়ে বলেন, “বিচার প্রক্রিয়ায় সন্তুষ্ট, নির্বাচনের পরও যেন বিচার প্রক্রিয়ায় কোনো বাধাগ্রস্ত না হয় সে বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর ইশতেহারে থাকবে এটা আমাদের প্রত্যাশা।”
নাহিদ বলেন, “শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে করা মানবতাবিরোধী অপরাধের এ মামলার আমিই মনে হয় শেষ সাক্ষী। আমার সাক্ষ্য নেয়ার পর এটি রায়ের দিকে যাবে। এ মামলায় হয়ত আমরা ন্যায়বিচার পাবো। তবে সারা দেশে গুম, খুন, গণহত্যা, নির্যাতনের আরও অনেক মামলা রয়েছে। সেগুলোর বিচার প্রক্রিয়া অনুসারে চলবে এটা প্রত্যাশা করি।”
তিনি আরও বলেন,
“নির্বাচনের পর বিচার প্রক্রিয়া সেটা যেন বাধাগ্রস্ত না হয়, সেটার জন্য ট্রাইব্যুনাল ও অন্যান্য বিচার প্রক্রিয়া রয়েছে সাধারণ আদালতে সেটা যেন অব্যাহত থাকে। সেই প্রতিশ্রুতি আমাদের এ সরকারের পক্ষ থেকে সে একটা রোডম্যাপের দাবি আমরা জানিয়েছি। এই মামলার রায় যদি হয়ে যায়, তারপর তো আর কোনো উপায় থাকে না। তাকে (শেখ হাসিনা) ফিরিয়ে এনে শাস্তি প্রদান করাই এই সরকার এবং যে কোনো সরকারের জন্য এটা একটা নৈতিক ও আইনি দায়িত্ব থাকবে।”
এদিকে,আজ শেখ হাসিনার এ মামলায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের সাক্ষ্য দেওয়ার কথা ছিল । এরই মধ্যে তিনি উপস্থিত হন ট্রাইব্যুনালে । তবে প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম জানিয়েছেন, মাহমুদুর রহমানকে স্টেট ডিফেন্স আইনজীবীর জেরা শেষ না হলে নাহিদের সাক্ষ্যগ্রহণের সম্ভাবনা কম।
আজ সকালে কারাগার থেকে এ মামলার অন্যতম আসামি থেকে রাজসাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে হাজির করা হয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে । তার উপস্থিতিতেই চলছে ১৬তম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ।
এর আগে গত ১৫ সেপ্টেম্বর সোমবার বেলা ১১টা ২০ মিনিট থেকে বিকেল পর্যন্ত ১৫ তম দিনের মতো ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্যগ্রহণ চলে । ওইদিন ৪৬তম সাক্ষী হিসেবে মাহমুদুর রহমানের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ না হওয়ায় পর্যন্ত মুলতবি করা হয়।
গত ৯ সেপ্টেম্বর ১৪তম দিনের মতো এ মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন ছয় জন। এখন পর্যন্ত ট্রাইব্যুনাল মোট ৪৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ রেকর্ড করেছেন । ৮ সেপ্টেম্বর তিনজন সাক্ষ্য দেন ।
গত ২ সেপ্টেম্বর চৌধুরী মামুন ৩৬ নম্বর সাক্ষ্য দিয়েছেন । ৪ সেপ্টেম্বর তার জেরা শেষ হয় । শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের নির্দেশে জুলাই-আগস্টে গণহত্যা চালানো হয়েছে জানিয়ে তিনি ক্ষমা চেয়েছেন। একইসঙ্গে অজানা অনেক তথ্য ট্রাইব্যুনালের সামনে এনেছেন। ১ সেপ্টেম্বর দশম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষ হয়। এদিন জবানবন্দি দিয়েছেন ছয়জন। এর মধ্যে রয়েছেন চিকিৎসক-সাংবাদিক ও প্রত্যক্ষদর্শীরাও।