আজ দেশের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন ও অভিযোগ তুলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার মন্তব্য করেছেন, “শুধু সেক্যুলার শিক্ষা মানুষকে নৈতিক চরিত্র দিতে পারে না, বরং ইসলামের সুশিক্ষা ছাড়া এমন শিক্ষাব্যবস্থা ‘পশু তৈরি করছে, মানুষ নয়’, যার প্রমাণ আবরারের নির্মম হত্যা।”
আজ ৬ অক্টোবর রোজ সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের আব্দুস সালাম হলে শহীদ আবরার ফাহাদ দিবস উপলক্ষ্যে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) আয়োজিত ‘রুখে দাঁড়াও ভারতীয় আধিপত্যবাদ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে এসব কথা বলেন মিয়া গোলাম পরওয়ার।
মিয়া গোলাম পরওয়ার সেখানে বলেন,
“আবরার ফাহাদ কোনো ছাত্রসংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিল না, সে ছিল একজন দেশপ্রেমিক মেধাবী ছাত্র। তিস্তার পানি, ফেনী নদী, গ্যাস এবং কলকাতার বন্দরের ইতিহাস নিয়ে ফেসবুকে ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে লেখালেখি করায় বুয়েট ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে।”
তিনি আরও বলেন,
“সেরা বিদ্যাপীঠের মেধাবী ছাত্ররা এমন নৃশংস কাজ করতে পারে কীভাবে? এটি প্রমাণ করে তাদের মেধা, মনন, শিক্ষা ও চরিত্রে মানবতা নেই।”
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন,
“এখন আধিপত্যবাদ মানে শুধু ভৌগোলিক সীমানা বা দেশ দখল নয়। বরং এটি হলো এক দেশ অন্য দেশে বসে ‘রিমোট কন্ট্রোলের’ মাধ্যমে শাসক বসানো, রাজনীতি, অর্থনীতি, বাজার, পররাষ্ট্রনীতি নিয়ন্ত্রণ করা। এ কারণেই বাংলাদেশ তিস্তা নদীর পানি পাচ্ছে না এবং নানাভাবে শোষিত হচ্ছে।”
দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও আসন্ন নির্বাচন প্রসঙ্গে মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন,
“জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য একটি নির্দলীয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দরকার। বিদ্যমান রাষ্ট্র কাঠামোকে বদলে দিয়ে রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক সংস্কারের মাধ্যমে নতুন একটি রাষ্ট্র কাঠামো গঠন করতে হবে। এ সংস্কারের মধ্য দিয়ে এমন একটি রাষ্ট্রযন্ত্র তৈরি হবে, যেখানে নতুন করে আর কোনো ফ্যাসিস্ট কিংবা হাসিনার জন্ম হবে না।”
তিনি বলেন,
“আসন্ন নির্বাচনে ইসলামী শক্তি ও দেশপ্রেমিক শক্তির মধ্যে যে সমঝোতার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, কোনো আধিপত্যবাদী শক্তি যেন সেই ঐক্যের পথে বাধা সৃষ্টি না করতে পারে। পাশাপাশি ভারতের সঙ্গে সমতার ভিত্তিতে ও ন্যায্যতার মাধ্যমে সুসম্পর্ক বজায় রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।”
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জাগপার সহ সভাপতি ও দলীয় মুখপাত্র রাশেদ প্রধান।

