রাষ্ট্রীয় কাঠামোর ভেতর দিয়ে তরুণ প্রজন্মকে উপেক্ষা করে যদি কোনো শক্তি সংসদের দিকে অগ্রসর হওয়ার চিন্তা করে, তবে তারা ভুল পথে রয়েছে — এমন মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ।
বুধবার (১১ ডিসেম্বর) ঢাকা কলেজের অডিটোরিয়ামে ‘জুলাই অভ্যুত্থানে ঢাকা কলেজের ভূমিকা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি। আলোচনায় তিনি উল্লেখ করেন, যে সকল আমলা, ব্যবসায়ী ও পুলিশ সদস্য ফ্যাসিবাদকে টিকিয়ে রাখতে সহায়তা করেছেন, তরুণ প্রজন্মের মধ্যে তাদের প্রতি ক্ষোভ রয়েছে।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, “আজ আমরা স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারছি। ফেসবুক ব্যবহারের সময় আমাদের ব্যাকস্পেস ব্যবহার করতে হয় না। তবে এই তরুণ প্রজন্মের ক্ষোভ রয়েছে সেইসব বিচারকদের প্রতি, যাদের সিদ্ধান্তে নিরীহ মানুষ ফাঁসির দড়িতে ঝুলেছে।”
তিনি আরও বলেন, “যে ব্যবসায়ী , আমলা ও পুলিশ সদস্যরা ফ্যাসিবাদকে টিকিয়ে রাখতে ভূমিকা রেখেছেন, তাদের প্রতি তরুণ প্রজন্মের প্রচণ্ড ক্ষোভ রয়েছে। বর্তমান সময়কে যথাযথভাবে কাজে লাগাতে হবে। তা না হলে ভবিষ্যতে আমাদেরকেও তাদের মতো কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হতে পারে।” তারা ব্যর্থ হয়েছিল বলেই তরুণ প্রজন্ম গুলির সামনে বুক পেতে দাঁড়িয়েছিল। বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হলে তরুণ সমাজকেই এগিয়ে আসতে হবে। যদি কেউ তরুণ প্রজন্মকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখে, তবে তারা সেই স্বপ্নে ভুল করছে।”
হাসনাত আরও বলেন, “আজ তরুণ প্রজন্মের প্রশ্ন করার ক্ষমতা দেখে অনেকে ভয় পাচ্ছে। তাই আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।”
আলোচনা সভায় বক্তারা জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ছিল ঢাকা কলেজ। আন্দোলনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সংগ্রাম করেছেন। সেই সময়ে ঢাকা কলেজ ও এর আশপাশের এলাকায় ছিল চরম উত্তেজনা ও ভয়াবহ পরিবেশ। বক্তারা বলেন, “জুলাই বিপ্লবের চেতনাকে সঙ্গে নিয়ে দেশের ভবিষ্যৎ নির্মাণে তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে।”
ঢাকা কলেজ শাখার উদ্যোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে আহত শিক্ষার্থীরাও। তারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারকে “পবিত্র” হিসেবে উল্লেখ করে এই ব্যানার যাতে কোনোভাবেই কলুষিত না হয়, সেই ব্যাপারে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।
আহত শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, যারা এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, তাদের দ্রুত উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে।