নির্বাচন কমিশনের আচরণে পক্ষপাতিত্ব দেখা যাচ্ছে বলে দাবি করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম।
গতকাল ২২ অক্টোবর বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সামনে এনসিপি আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম এমন দাবি করেন ।
নাহিদ ইসলাম সেখানে বলেন, আমরা নির্বাচন কমিশন নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছি। নির্বাচন কমিশনের গঠন করার প্রক্রিয়া এবং নির্বাচন কমিশনের বর্তমান আচরণ আমাদের কাছে নিরপেক্ষ মনে হচ্ছে না, তাদের বর্তমান আচরণ স্বচ্ছ হচ্ছে না। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচন কমিশনের যেসব কাজ করার কথা ছিল, সেগুলো করছে না।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচন কমিশনের আচরণে পক্ষপাতিত্ব দেখা যাচ্ছে, কিছু কিছু দলের প্রতি বিমাতাসুলভ আচরণ দেখা যাচ্ছে। একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন প্রয়োজন। নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে দায় সরকারের ওপর আসবে। তাই সরকারকে এ বিষয়ে আমরা জানিয়েছি। আমরা মনে করি যে, এই মুহূর্তে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করা প্রয়োজন।
জনপ্রশাসনের যে বদলি হচ্ছে সেগুলো কীসের ভিত্তিতে হচ্ছে এই বিষয়ে প্রশ্ন রেখে নাহিদ ইসলাম আরও জানান, জনপ্রশাসনের যে বদলি হচ্ছে সেগুলো দক্ষতা এবং যোগ্যতার ভিত্তিতে হচ্ছে কি না? আমরা দেখতে পাচ্ছি এবং শুনতে পাচ্ছি যে, প্রশাসনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ভাগবাটোয়ারা হচ্ছে। যারা বড় রাজনৈতিক দল হিসেবে পরিচয় দেয় তারা প্রশাসন, এসপি, ডিসি ভাগবাটোয়ারা করছে। তারা নির্বাচনের জন্য তালিকা করছে এবং সেগুলো সরকারকে দিচ্ছে।সেই দলগুলোকে উপদেষ্টা পরিষদের ভেতর থেকেও সহায়তা করা হচ্ছে। এভাবে চললে সরকারের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হবে। উপদেষ্টা পরিষদে যাদের বিরুদ্ধে এই সংশ্লিষ্টতা রয়েছে তাদের বিষয় যেন প্রধান উপদেষ্টা সিদ্ধান্ত নেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাত করে অনেকগুলো বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। তার মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে জুলাই গণহত্যার ফ্যাসিস্টের বিচারের বিষয়টি। আজ আমরা দেখেছি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কারণে এবং অভিযোগের কারণে আদালতে আনা হয়েছে সেনাবাহিনীর কয়েকজন সদস্যকে । আমরা সাধুবাদ জানিয়েছি এই বিষয়টিকে। সরকার এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রতি আমরা ধন্যবাদ জ্ঞাপন করি। ন্যায়বিচারের একটি ধাপের দিকে আমরা এগোচ্ছি।
তিনি বলেন, এর পাশাপাশি সারাদেশে শহীদ এবং আহত পরিবারের পক্ষ থেকে যেসব মামলা হয়েছে, সেই মামলাগুলোর বিষয়ে সরকারের কি পদক্ষেপ। পত্রপত্রিকায় আমরা দেখতে পাচ্ছি জামিনে আসামিরা ছাড়া পাচ্ছে। শহীদ পরিবার এবং আহতদের হুমকি দিচ্ছে। শহীদ পরিবার, আহতদের নিরাপত্তা এবং বিচারের যে রোডম্যাপ আমরা চেয়েছি সেই রোডম্যাপ যেন প্রকাশ করা হয়। আটশোর অধিক যে মামলাগুলো হয়েছে; সে মামলাগুলোর এখন কি অবস্থা, সেগুলো কীভাবে পরিচালিত হবে, কোন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সম্পন্ন হবে।
নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, জুলাই সনদ নিয়েও আমরা কথা বলেছি। আয়োজিত হয়েছে জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান এবং অংশগ্রহণ করেনি এনসিপি সেখানে । ফলে আমরা আমাদের অবস্থান তুলে ধরেছি সরকারের কাছে । ঐকমত্য কমিশনের কাছেও আমরা তুলে ধরেছি। আমরা সেই কথাগুলোই পুনর্ব্যক্ত করেছি যে, আমরা জুলাই সনদের শুধু কাগুজে মূল্যে বিশ্বাসী নই। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন কীভাবে হবে, সেটির নিশ্চয়তা পাওয়ার পরই সনদে আমরা স্বাক্ষর করবো।