আজ জুলাই গণহত্যার বিচার, জুলাই সনদের ভিত্তিতে পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা এবং জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের বিচার এবং বিচার চলাকালে তাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার দাবিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বিক্ষোভ-মিছিল করেছে।
ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখা আয়োজিত এই কর্মসূচিতে দলটির নেতাকর্মীদের ব্যাপক অংশগ্রহ দেখা গেছে। বিক্ষোভ-মিছিলে তারা ‘যদি না হয় পিআর, আবার ফিরবে স্বৈরাচার’এমন ধরণের বিভিন্ন স্লোগান দেন।
এর আগে ১৮ সেপ্টেম্বর রোজ বৃহস্পতিবার জোহরের নামাজের পর মিছিলের আগে বাইতুল মোকাররমের উত্তর গেটে সমাবেশ করে দলটি। কোরআন তিলাওয়াতের মধ্য দিয়ে শুরু হয় বিক্ষোভ মিছিল-পূর্বক সমাবেশ। সেখানে দলটির শীর্ষস্থানীয় নেতারা বক্তৃতা করেন ।
বক্তারা সেখানে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি এবং পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের প্রতি জোর দিয়ে কথা বলেন। এছাড়াও গণহত্যার বিচার নিশ্চিত করা এবং জাতীয় পার্টিসহ ১৪ টি দলের বিচার নিশ্চিতেও সরকারকে কঠোর হুঁশিয়ারি দেন তারা। সেখানে বক্তাদের মধ্যে কেউ কেউ প্রাইমারি স্কুলে গান ও নাচের শিক্ষক বাধ্যতামূলক করার বিষয়ে এর বিপক্ষে কঠোর প্রতিবাদ জানান।
বিকাল ৩টায় সমাবেশ শেষ হলে শুরু হয় বিক্ষোভ মিছিল । মিছিলটি বাইতুল মোকাররমের উত্তর গেট সংলগ্ন রাস্তা দিয়ে শুরু হয়ে পল্টন মোড় পর্যন্ত গিয়ে আবার বাইতুল মোকাররমের সামনে এসে শেষ হয়। কোরআন তিলাওয়াত করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি ফয়জুল করিম মিছিল সমাপ্ত করেন।
এর আগে বিক্ষোভ-মিছিলপূর্বক সমাবেশে মুফতি ফয়জুল করিম বলেন,
“আমি মনে করি, ভারত জুলাই চায় না। জুলাইয়ের আইনি ভিত্তি দিতে হবে। আপনারা কি ভারতের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন? অন্তর্বর্তী সরকার শুধু নির্বাচন দেয়ার জন্য ক্ষমতায় আসেনি। নির্বাচনের আগে ৩টি কাজ করতে হবে। সংস্কার, দৃশ্যমান বিচার এবং নির্বাচন। নির্বাচন পিআর পদ্ধতিতে দিতে হবে। ৮০ শতাংশ জনগণ পিআরের পক্ষে।”
তিনি আরও বলেন,
“পিআরে তো বিএনপির আপত্তি থাকার কথা না। কারণ তাদের উচ্চপর্যায়ের এক নেতা দাবি করেছেন, নির্বাচনে তারা ৯০ শতাংশ ভোট পাবেন। আর তারা যেহেতু সবার সম্পৃক্ততায় নির্বাচন চান সেহেতু পিআর তো তাদেরই চাওয়ার কথা। পিআর পদ্ধতির নির্বাচনে ফ্যাসিস্ট তৈরি হবে না, কালো টাকা সাদা করার সুযোগ থাকবে না, ভোট ছিনতাইয়ের সুযোগ থাকবে না।বাম, ডান হিন্দু মুসলমানের সংসদ হবে। যেকোনো আন্দোলনের জন্য রাস্তায় নামতে হবে না। আন্দোলন হবে সংসদে। যদি কোনো সংশয় থাকে গণভোট দেন। জনগণ চাইলে পিআরে নির্বাচন হবে, না চাইলে হবে না।”
প্রাইমারি স্কুলে গান এবং নাচের শিক্ষক নিয়োগ না দেয়ারও দাবি জানিয়ে তিনি বলেন,
“মুসলমানদের ট্যাক্সের টাকায় এই দেশে নাচ-গানের শিক্ষক নিয়োগ দেয়া যাবে না। কেউ যদি করতে চায় তাহলে সে মসনদে থাকতে পারবে না। যদি টিচার দিতে চান তাহলে কম্পিউটারের টিচার দেন। আর ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ বাধ্যতামূলক করতে হবে।”
এছাড়া সমাবেশে অন্য বক্তারা বলেন,
“সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হবে না। পিআর পদ্ধতিতেই হতে হবে। জুলাই সনদের আইনের ভিত্তিতে নির্বাচন হতে হবে। যারা নির্বাচনে বানচাল করতে চায় তাদের আগামী নির্বাচনে জনগণ তাদের বঙ্গোপসাগরে পাঠাবে।”
তাদের দাবি আদায় হওয়া পর্যন্ত তারা রাজপথ ছারবেন না বলে ঘোষণা দেন তারা।

