৩ জুলাই ২০২৫:
লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলায় পাথর ও বালু বহনকারী যানবাহন থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায়ের অভিযোগ তুলে বুধবার (২ জুলাই) দিবাগত রাত ১টা ১৩ মিনিটে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডি থেকে দেওয়া স্ট্যাটাসে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।
এই চাঁদাবাজির সঙ্গে বিএনপির নাম ব্যবহার এবং দলীয় নেতাকর্মীদের সংশ্লিষ্টতার কথা উল্লেখ করে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে সরাসরি ট্যাগ করে তিনি নিজের অবস্থান তুলে ধরেন ।
সেই পোস্টে সারজিস আলম লিখেছেন,
“লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলায় সরকার অনুমোদিত পাথর ও বালুর সাইটগুলো থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মাল পরিবহনকারী যানবাহনগুলো প্রতিনিয়ত চাঁদাবাজির শিকার হচ্ছে। প্রত্যেকটি গাড়ি থেকে ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে ১,০০০ টাকা পর্যন্তও চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। মাসিক হিসাবে লাখ টাকারও বেশি অবৈধ অর্থ লুটপাট করা হচ্ছে। বিএনপির নাম ব্যবহার করে এসব কর্মকাণ্ড চালানো হচ্ছে।”
তিনি আরও দাবি করেন, এসব চাঁদাবাজির সঙ্গে যুক্ত কিছু ব্যক্তিকে বুধবার ইউএনও (উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা) আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে এক মাসের কারাদণ্ড দেন। কিন্তু এরপরই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি । বিএনপি ও স্বেচ্ছাসেবক দলের কয়েকশ’ নেতাকর্মী সংশ্লিষ্ট থানা ঘেরাও করে, সেখানে ভাঙচুর চালায় এবং ছিনিয়ে নিয়ে যায় আটককৃত চাঁদাবাজদের বলে অভিযোগ করেছেন সারজিস।
তিনি তার পোস্টে আরও উল্লেখ করেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য লালমনিরহাট জেলা পুলিশ সুপার পার্শ্ববর্তী হাতীবান্ধা থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ চাইলেও, বিএনপি নেতাকর্মীরা হাতীবান্ধা থানাও অবরুদ্ধ করে রাখে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, “এই মাঠপর্যায়েই যদি বিএনপির আচরণ হয়, তাহলে দেশ কীভাবে সংস্কার হবে ?”
এনসিপি এই নেতা আরও বলেন,
“সেখানকার স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, এক বিএনপি-ঘনিষ্ঠ এমপি প্রার্থীর মত রয়েছে এই অপকর্মের পেছনে ।” তার অভিযোগ এই, স্থানীয় পর্যায়ের নেতাদের লাগাম টেনে ধরার আগে দেশ সংস্কারের স্বপ্ন দেখানো নৈতিকভাবে সঠিক নয়।
সারজিস আলম তার পোস্টে তীব্র ভাষায় বলেন,
“আমরা বিএনপির দফা কিংবা কথাবার্তা আর দেখতে চাই না। আমরা তাদের অপকর্মের বিরুদ্ধে অবস্থান ও অ্যাকশন দেখতে চাই । সেটা যদি নিজ দলের নেতাকর্মীর বিরুদ্ধেও হয়, তবেই জনগণ আস্থা পাবে।”
এ ঘটনায় এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি বিএনপির পক্ষ থেকে । তবে স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে।
Tasin/DBN