জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে নির্বাচন, সংস্কার ও দেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক রূপরেখা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেওয়া হয়েছে। দলটির নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, যেসব প্রশ্ন ও শঙ্কা জুলাই মাসকে ঘিরে তৈরি হয়েছে, তা এখনই ‘ব্যর্থ’ আখ্যা দেওয়ার মত সময় নয়। বরং এই মাসে জনগণের মুক্তি ও স্বৈরাচারী শক্তির পতন ; এখন পর্যন্ত এটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় অর্জন বলে মনে করেন তিনি।
জামায়াত নেতা আরও জানান,

‘জুলাই ব্যর্থ হয়নি। এখনই চূড়ান্ত মন্তব্য নয়। অনেক কিছু এখনও বিচার-বিশ্লেষণ করা বাকি। এই মাসের সফলতা নিয়ে অনেকে সংশয় প্রকাশ করলেও এই মাসের সবচেয়ে বড় সাফল্য হচ্ছে একটি স্বৈরাচারকে বিদায় জানানো এবং জনগণকে মুক্ত করা। এখন প্রয়োজন হলো সেই অর্জনকে সুসংহত করে তোলা এবং কাঙ্ক্ষিত সংস্কার বাস্তবায়ন করা।
সংস্কার ও ন্যায়বিচার দৃশ্যমান হওয়া জরুরি জানিয়ে তিনি বলেন,
যদি সংস্কার ও বিচার কার্যকরভাবে বাস্তবায়িত না হয়, তাহলে হতাশা বাড়বে জনগণের মধ্যে। এমনকি তাদের মধ্যে শঙ্কা সৃষ্টি হতে পারে পরবর্তী নির্বাচন নিয়েও । তিনি এই কারণে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান; দেশের রাজনৈতিক কাঠামো পুনর্গঠন করতে হবে বাস্তব সংস্কারের মাধ্যমে ।
সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘‘জনগণ যাকে ভোট দেবে, নেতৃত্বে সেই আসবে; এটাই হচ্ছে গণতন্ত্রের ন্যূনতম শর্ত।’’ কোনোরকম কারসাজি বা পক্ষপাতদুষ্ট নির্বাচন দেশকে অনিশ্চয়তা ও অস্থিতিশীলতার দিকে ঠেলে দেবে। কোনোভাবেই জনগণ সেটা মেনে নেবে না।
তাহের বলেন, দেশের মানুষ গত বছরের ৫ আগস্টের পর একটি মৌলিক পরিবর্তনের প্রত্যাশা করছিল, যা দেখা যায়নি গত ৫০ বছরের ইতিহাসেও । সরকার এক ধরনের সংস্কার চালানোর জন্য চেষ্টা করছে, তবে তা যথেষ্ট নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তাঁর ভাষায়, “এখনো সংবিধানের কিছু ধারা পরিবর্তনের দাবি রাখে। যদি সরকার তা না করে, তবে তা আদায় করে নিতে হবে জনগণের আন্দোলনের মাধ্যমে ।”
তিনি বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে জামায়াতসহ অধিকাংশ রাজনৈতিক দল একটি মৌলিক পরিবর্তনের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ রয়েছেন, তবে বিএনপিসহ তিনটি দল এতে এখনও সম্পৃক্ত হয়নি। সেই দলগুলোর প্রতিও তিনি আহ্বান জানান গণতন্ত্র ও সংস্কারের প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য।
বাংলাদেশের বর্তমান রাজনীতিতে জামায়াত ইসলামীর এই বক্তব্য একটি নতুন মোড় এনে দিতে পারে। বিশেষ করে যারা ঐক্যবদ্ধ রাজনৈতিক সংস্কারের পক্ষপাতী, এই বার্তা তাদের কাছে তাৎপর্যপূর্ণ। তবে বড় প্রশ্ন থেকে যায়—সরকার বাস্তবে কতটা সংস্কার বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হবে? এবং সেই সংস্কার জনগণের প্রত্যাশা পূরণে কতটা কার্যকর হবে?
Tasin/DBN