২৯ মে ২০২৫, ঢাকা
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নগর ভবনের সামনে ডিএসসিসির বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়রের দায়িত্ব দ্রুত হস্তান্তর না করলে চলমান আন্দোলন আরও বেগবান করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন বিএনপি নেতা ও ডিএসসিসির মেয়র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন।
তিনি কর্মসূচিতে অভিযোগ করেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আদালতের সুস্পষ্ট রায় থাকা সত্ত্বেও গড়িমসি করছে তাদের দায়িত্ব হস্তান্তরে এবং তারা উপেক্ষা করছে আদালতের নির্দেশ , যা আইনের প্রতি অবমাননার শামিল।
ইশরাক হোসেন সেখানে আরও বলেন, “ অন্তর্বর্তী সরকার আদালতের নির্দেশনার পরও ব্যর্থ হয়েছে তাদের দায়িত্ব হস্তান্তরে । এটা হচ্ছে আদালতের অবমাননা করা। আমরা আর সময় দেব না। আমাকে দ্রুত সময়ের মধ্যে শপথ পাঠ করাতে হবে, নইলে আরও তীব্র হবে এই আন্দোলন।”
তিনি ডিএসসিসি তে আরও বলেন, “একজন মেয়রকে সরকার যদি শপথ পাঠ করাতে ব্যর্থ হয়, তাহলে আগামী জাতীয় নির্বাচনে নির্বাচিত তিনশ এমপিকে কীভাবে শপথ পড়াবে তারা?”
২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনের পর ডিএসসিসি নির্বাচন নিয়ে জটিলতার সূত্রপাত ঘটে। আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস ওই নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হন এবং নির্বাচন কমিশন ফলাফলের গেজেট প্রকাশ করে ২ ফেব্রুয়ারিতে । এর ফলে ৩ মার্চ ২০২০ সালে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি প্রার্থী ইশরাক হোসেনকে আদালতে মামলা দায়ের করেন তিনি।
চলতি বছরের ২৭ মার্চ দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া শেষে এক ঐতিহাসিক রায় দিয়ে ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল বৈধ মেয়র হিসেবে ঘোষণা করে ইশরাক হোসেনকে । নির্বাচন কমিশন সেই রায়ের ভিত্তিতে ২৭ এপ্রিল গেজেট প্রকাশ করে।
তবে, আইনজীবী মামুনুর রশিদ এই গেজেট ও রায়ের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন । ২২ মে হাইকোর্ট সেই রিট সরাসরি খারিজ করে দেয়। বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রায় দেয় যে, এখতিয়ার নেই মামুনুর রশিদের এ ধরনের রিট দায়েরে করার।
২৭ মে মামুনুর রশিদ উক্ত আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে “লিভ টু আপিল” আবেদন করেন এবং আহ্বান জানান হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত রাখার । ২৯ মে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে সাত বিচারপতির আপিল বেঞ্চ বিষয়টি নিষ্পত্তি করে তিনি মন্তব্য করে যে, নির্বাচন কমিশন ইশরাক হোসেনের শপথ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে ।
এই জটিলতা শুধু একটি নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে শপথ গ্রহণের প্রশ্ন নয়, বরং তা প্রশ্নে পরিণত হয়েছে একটি বৃহৎ রাজনৈতিক সাংবিধানের । এই ঘটনাকে সরকারের অগণতান্ত্রিক আচরণ ও প্রশাসনিক গড়িমসির নিদর্শন হিসেবে তুলে ধরছেন বিএনপি এবং ইশরাক হোসেন।
Tasin/DBN