২৮ মে ২০২৫
আজ বুধবার দুপুর দেড়টায় ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত “চলতি মৌসুমের বোরো সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন, মজুদ ও বিতরণ” বিষয়ে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের খাদ্য উপদেষ্টা মো. আলী ইমাম মজুমদার বলেছেন, অত্যন্ত সন্তোষজনক রয়েছে দেশের বর্তমান খাদ্য পরিস্থিতি এবং খাদ্যসংকটের কোনো আশঙ্কা নেই অদূর ভবিষ্যতে । তিনি এই বিষয়ে জানান, সারা দেশে বোরো মৌসুমে ধান ও চাল সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু হয়েছে এবং সরকার আত্মবিশ্বাসী এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে । তবে ময়মনসিংহ বিভাগে খাদ্য মজুদের অবকাঠামোগত সক্ষমতা কিছুটা সীমিত থাকায় দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
এই সভায় বোরো সংগ্রহে লক্ষ্যমাত্রা ও বর্তমান অগ্রগতির বিষয়ে খাদ্য উপদেষ্টা বলেন, “আমরা ১৪ লাখ মেট্রিক টন চাল এবং সাড়ে ৩ লাখ মেট্রিক টন ধান এই চলতি মৌসুমে সংগ্রহ করবো। ইতোমধ্যে অনেক ভালো ফসল পাওয়া গেছে। আশা করছি কোনো জটিলতা হবে না দেশের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ।”
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ময়মনসিংহ বিভাগের চার জেলায় ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা চলতি বোরো মৌসুমে নির্ধারিত হয়েছে ৪৭ হাজার ৯৩৬ মেট্রিক টন। ইতোমধ্যে ১ হাজার ৮৪৬ মেট্রিক টন ধান অর্জিত হয়েছে । এ ছাড়া সিদ্ধ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ২ লাখ ২৫ হাজার ৮২৭ মেট্রিক টন হলেও ইতোমধ্যে এর বিপরীতে ইতোমধ্যে সংগ্রহ করা হয়েছে ২ লাখ ২৫ হাজার ৬২৭ মেট্রিক টন, যা লক্ষ্যমাত্রার প্রায় সমান।
খাদ্য উপদেষ্টা এ প্রসঙ্গে বলেন, “দেশের ফলন সার্বিক দিক বিবেচনায় ভালো হয়েছে এবং উৎপাদন হয়েছে সন্তোষজনক। আমরা সুবিধাজনক অবস্থানে আছি মজুদের দিক থেকেও । জাতীয় পর্যায়ে বর্তমানে আমাদের খাদ্য মজুদ রয়েছে প্রায় ১৫ লাখ মেট্রিক টন, যা গত বছরের এই সময়ের তুলনায় প্রায় ৩ লাখ মেট্রিক টন বেশি।”
খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার আরও বলেন, “আমাদের প্রধান খাদ্যশস্য চাল হলেও গমের চাহিদাও অনেক বেশি রয়েছে, বিশেষ করে রুটির ওপর নির্ভরশীল জনগোষ্ঠীর কারণে। আমাদের দেশে গমের বার্ষিক চাহিদা রয়েছে প্রায় ৭০ লাখ মেট্রিক টন, অথচ উৎপাদন হয় মাত্র ১০ লাখ মেট্রিক টন। অর্থাৎ ঘাটতি রয়েছে প্রায় ৬০ লাখ মেট্রিক টনের ।”
তিনি আরও জানান, বেসরকারি খাত থেকে এই ঘাটতির বড় অংশ আমদানি করে পূরণ করা হয়। বছরে ৭-৮ লাখ মেট্রিক টন গম প্রয়োজন হয় সরকারি রেশনের জন্য । বর্তমানে গম প্রায় ৩ লাখ মেট্রিক টন মজুদ রয়েছে ।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে সেখানে বলেন, “যদি বোরোর মতো ফলন ভালো হয় আমন মৌসুমেও , তবে চাল আমদানি করার প্রয়োজন নাও হতে পারে বিদেশ থেকে । আমাদের খাদ্য নিরাপত্তার কৌশলের অংশ খাদ্যশস্য আমদানি হলেও, দেশীয় উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে নির্ভরতা কমানোর লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে।”
Tasin/DBN