বিএনপি গায়ের জোরে নগর ভবন বন্ধ করে আন্দোলন করছে বলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া মন্তব্য করেছেন ।
আজ সোমবার বিকেলে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে তার দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে নগর ভবনে চলমান আন্দোলনের বিষয়ে ফেসবুকে দেওয়া পোস্টে এ মন্তব্য করেন উপদেষ্টা ।
‘ঢাকাবাসী’ নগর ভবনের সামনে আজ ষষ্ঠ দিনের মতো ইশরাকের সমর্থকেরা বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। তাঁরা তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন নগর ভবনের মূল ফটকে। তাঁদের দাবি এই যে, আদালতের রায় ও নির্বাচন কমিশনের গেজেট প্রকাশের পরও ইশরাক শপথ নিতে পারছেন না উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের কারণেই ।
ইশরাক হোসেনের মেয়র হিসেবে শপথ না হওয়ার পেছনে উপদেষ্টা ১০টি জটিলতার কথা উল্লেখ করে বলেছেন, ‘এসব জটিলতা নিরসন না করা পর্যন্ত শপথ গ্রহণ সম্ভব নয়। নগর ভবন বন্ধ করে মহানগর বিএনপি এই আন্দোলন চালাচ্ছে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে বরং গায়ের জোরে আদায় করার উদ্দেশ্যেই । ফলে দৈনন্দিন কাজ ব্যাহত হওয়াসহ জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে এই ঝামেলায় পড়েছে সিটি করপোরেশন।’
১০টি বিষয় আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া তাঁর পোস্টে উল্লেখ করেছেন। পোস্টের এ অংশ নিচে তুলে ধরা হলো:
১; আরজি সংশোধন অবৈধ মর্মে হাইকোর্টের রায় ভায়োলেট করে নির্বাচন কমিশন ট্রাইব্যুনাল এই রায় প্রদান করেছে।
২;নির্বাচন কমিশন শুনানিতে অংশগ্রহণ না করায় একপাক্ষিক রায় হয়েছে এবং পরবর্তীতে কমিশন আপিলও করেনি।
৩;আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত চাওয়া হলেও মতামত দেওয়ার আগেই এবং একই সাথে দুইজন নাগরিকের পাঠানো লিগ্যাল নোটিশ উপেক্ষা করে রাত ১০টায় গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন।
৪;স্থানীয় সরকার বিভাগ উক্ত মামলায় পক্ষভুক্ত ছিল না এবং রায়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রতি কোনো নির্দেশনার উল্লেখ নেই।
৫;নির্বাচন কমিশন শপথ না দেওয়ার কারণে স্থানীয় সরকার বিভাগকে বিবাদী করে দায়ের করা হয়েছে রিট পিটিশন, যা এখনো বিচারাধীন।
৬; বরিশাল সিটি করপোরেশন–সংক্রান্ত মামলায়, ট্রাইব্যুনাল আরজি সংশোধন–সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায়কে আমলে নিয়ে খারিজ করেছে। ফলে দ্বিমুখী অবস্থান বোধগম্য হচ্ছে না ট্রাইব্যুনালের ।
৭;দেখা দিয়েছে মেয়াদ–সংক্রান্ত জটিলতা ; কত দিন মেয়র থাকবেন বা আদৌ মেয়াদ আছে কি না, তা স্পষ্ট নয়।
৮;নির্বাচন কমিশনের চিঠিতে “কোনো প্রকার আইনি জটিলতা না থাকলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ”–এর কথা বলা হয়েছে। স্পষ্টতই বিতর্কিত রায়, স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রতি কোনো নির্দেশনা না থাকা, লিগ্যাল নোটিশ এবং রিট পিটিশন বিচারাধীন থাকা–সংক্রান্ত আইনি জটিলতা রয়েছে।
৯; এই জটিলতা নিরসনে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত চাওয়া হয়েছে।
১০;আওয়ামী আমলের অবৈধ নির্বাচনগুলোকে বৈধতা দেওয়ার প্রশ্নও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। রাজনৈতিক দলগুলো যদি স্বীকার করে যে আওয়ামী আমলের নির্বাচনগুলো বৈধ, তবে সরকারের জন্য এসব প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে না।’
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ পোস্টে একটি ছবিও যুক্ত করেছেন । তিনি ওই ছবি প্রসঙ্গে লিখেছেন, ‘তবে আমার বিরুদ্ধে ব্যক্তিগতভাবে ইশরাক হোসেনের এই আক্রমণাত্মক ও অপমানজনক কার্যক্রমের কোনো কারণ খুঁজে পেলাম না! আবার কেউ বলবেন না যে এটা সাধারণ জনগণ করছে; কারণ, বিএনপি এবং অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন গ্রুপের নির্দেশনা এবং গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য অনুযায়ী দলীয় নেতা-কর্মীরাই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।’