আজ জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর–বিভিন্ন প্রকারের ক্ষতিকর রং, ঘন চিনি, কেমিক্যাল, নোংরা পরিবেশ এবং কোনো প্রকার অনুমোদন ছাড়া আইসক্রিম তৈরির অপরাধে সিলগালা করে দিয়েছে বেবি আইসক্রিম নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে ।
আজ মঙ্গলবার দুপুর বেলা কেরানীগঞ্জের রহিতপুরে একটি আইসক্রিম ফ্যাক্টরিতে ভোক্তা অধিকার অভিযান চালায় । ভোক্তা অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক বিকাশ চন্দ্র দাস এবং ঢাকা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান এই অভিযানের নেতৃত্ব দেন ।
এই অভিযানে দেখা যায়, বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) কোনো অনুমোদন ছাড়াই বিভিন্ন ক্ষতিকর রং, ঘন চিনি, সেকারিন মিশিয়ে তৈরি করছে নানান ধরনের আইসক্রিম । আইসক্রিমের মোড়কে উৎপাদন সম্পর্কে দেওয়া নেই কোনো প্রকার তথ্য । বাজার থেকে নকল প্যাকেট ক্রয় করে করা হচ্ছে আইসক্রিম মোড়কজাত । এছাড়া মোড়কের উপরে প্রতিষ্ঠানের ব্যবহার করা হয়নি কোনো ঠিকানা । এসব আইসক্রিম নোংরা পরিবেশে তৈরি করা হচ্ছে ।
ভোক্তা স্বার্থ বিরোধী এমন অপরাধে প্রতিষ্ঠানটিকে ভোক্তা অধিকার আইন ২০০৯ অনুসারে জরিমানা করা হয় তিন লাখ টাকা । তাৎক্ষণিক জরিমানার টাকা পরিশোধ করতে না পারায় কারখানা ভোক্তা অধিকারের কর্মকর্তা প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করে দেন । এছাড়া নষ্ট করে দেয় কারখানায় থাকা তৈরিকৃত সব আইসক্রিম । নষ্ট করে দেওয়া হয় মজুত থাকা ঘন চিনিও ।
এই অভিযানের বিষয়ে মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান বলেন, কেরানীগঞ্জের রহিতপুর বাজারে এই আইসক্রিম ফ্যাক্টরিতে অনুমোদন ছাড়াই আইসক্রিম তৈরি করছে। আইসক্রিমে ঘন চিনি ব্যবহার করা হচ্ছে। ঘন চিনি বা সোডিয়াম সাইক্লামেট মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এছাড়া অ-অনুমোদিত রং এবং ফ্লেভার ব্যবহার করে আইসক্রিম তৈরি করছেন।
তিনি বলেন, এসব আইসক্রিম ছোট বাচ্চারা বিভিন্ন দোকান থেকে কিনে খায়। যা ক্ষতিকর।
ভোক্তা অধিকারের এই কর্মকর্তা অভিভাবকদের উদ্দেশ্য করে বলেন, আইসক্রিমে যে রং ব্যবহার করা হয় এগুলো ফুড গ্রেডেট নয়। আমি অভিভাবকদের অনুরোধ করবো যতদিন পর্যন্ত আমরা ফুড গ্রেডেট কালার নিশ্চিত করতে না পারছি ততদিন পর্যন্ত এসব রঙিন কোনো আইসক্রিমই বাচ্চাদের কিনে দিবেন না। বাইরের প্রক্রিয়াযাত করা কোনো খাবারই বাচ্চাদের খাওয়ানো উচিত নয়। প্রয়োজনে বাসায় আইসক্রিম তৈরি করে শিশুদের খাওয়ান।
মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান অবৈধ ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আইসক্রিমে কোনোভাবেই অ-অনুমোদিত রং ব্যবহার করা যাবে না। এসব রং মানুষের দেহের জন্য যেমন ক্ষতিকর তেমনই আইনত দন্ডনীয় অপরাধ। যদি এগুলো ধরা পড়ে তবে আইনের কঠোর প্রয়োগ করা হবে। পাশাপাশি তাদের প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
এসময় আরও দুটি বেকারীকে ৪০ হাজার টাকা এবং একটি ফার্মেসীকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।