তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী দ্রুত পাসের দাবিতে গতকাল রাজধানীর ইউনিভার্সিটি কলেজ ক্যাম্পাসে এক ব্যতিক্রমধর্মী সিগনেচার ক্যাম্পেইনের আয়োজন করা হয়। এই বিশেষ কর্মসূচির আয়োজক ছিল নারী মৈত্রী এবং সিদ্ধেশ্বরী কলেজের শিক্ষার্থীরা। দিনব্যাপী এই ক্যাম্পেইনে শত শত শিক্ষার্থী স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিয়ে স্বাক্ষরের মাধ্যমে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেন।
ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করেন কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল শায়েরা বেগম। এসময় উপস্থিত ছিলেন কলেজের সম্মানিত শিক্ষকবৃন্দ ও নারী মৈত্রীর প্রতিনিধিরা। উদ্বোধনী বক্তব্যে ভাইস প্রিন্সিপাল বলেন, “তামাক একটি নীরব ঘাতক। আমাদের তরুণ প্রজন্মকে সুরক্ষিত রাখতে হলে আইনি কাঠামোকে আরো শক্তিশালী করতে হবে। এই ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা সচেতনতা ছড়ানোর পাশাপাশি নীতিনির্ধারকদেরও বার্তা দিচ্ছে।”
শিক্ষার্থীরা এই ক্যাম্পেইনে অংশ নিয়ে বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবনাও উপস্থাপন করেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
ধূমপানের জন্য সকল ধরনের পাবলিক প্লেসকে সম্পূর্ণ ধূমপানমুক্ত করা
তামাকজাত পণ্যের বিক্রয়স্থলে প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা
তামাক কোম্পানির সামাজিক দায়বদ্ধতার (CSR) কার্যক্রম বন্ধ করা
তামাকপণ্যের প্যাকেটের গায়ে শতভাগ সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তা প্রদান
ই-সিগারেট ও অন্যান্য বিকল্প নিকোটিন ডিভাইস নিষিদ্ধ করা
এই বিষয়ে বক্তব্য দিতে গিয়ে নারী মৈত্রীর ইয়ুথ এডভোকেট এবং কলেজের শিক্ষার্থী মিৎসুইয়া হোসেন বলেন,
“যারা তামাক সেবন করে, তারা যেমন নিজেরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তেমনি আমরা নারী ও শিশুরাও পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছি। আমরা তামাক ব্যবহার করি না, তবুও সেই ধোঁয়ার কারণে আমরা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে আছি। এটি এক ধরনের বৈষম্য। আমরা এই অকাল মৃত্যু ও অসুস্থতার মিছিল দেখতে চাই না। তাই সরকারের কাছে আমাদের জোর দাবি, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী দ্রুত পাস করা হোক।”
ক্যাম্পেইনের আয়োজকরা জানিয়েছেন, এই ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে সংগৃহীত হাজারো শিক্ষার্থীর স্বাক্ষর প্রধান উপদেষ্টা বরাবর জমা দেওয়া হবে, যাতে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হয়।
এ ধরনের সচেতনতা কার্যক্রমের মাধ্যমে দেশের শিক্ষার্থী সমাজ যেমন সচেতন হচ্ছে, তেমনি ভবিষ্যতের তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গঠনে তারা নিজেদের সক্রিয় ভূমিকা রাখছে।
Tasin/DBN