১৬ জুলাই ২০২৫:
আজ বুধবার গোপালগঞ্জ জেলায়‘জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আয়োজিত একাধিক কর্মসূচির ওপর ধারাবাহিক হামলার ঘটনা ঘটেছে । দুপুর বেলা শহরের একটি সমাবেশস্থলে দিনভর টানটান উত্তেজনার মধ্যে ককটেল ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে হামলা চালায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বলে অভিযোগ উঠে এসেছে।
স্লোগান দিয়ে ককটেল বিস্ফোরণের বিষয়ে জানা যায়;
আজ দুপুর আনুমানিক ১২টা ৪৫ মিনিটে এনসিপির সমাবেশস্থলে একদল দুর্বৃত্ত আকস্মিকভাবে স্লোগান দিতে দিতে হানা দেয় । তারা প্রথমে খালের ওপার থেকে এসে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে এবং এরপরেই ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে ওই সমাবেশস্থলে উপস্থিত বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হন।
ডিজিটাল খবরের প্রতিবেদক জানান, এই হামলা ‘অতর্কিত’ ছিল না। কারণ, পুলিশের উপস্থিতিতেই হামলা সংঘটিত হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা প্রথমে পিছু হটে গেলেও পরে অতিরিক্ত পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ইউএনও’র গাড়ি বহরে হামলার বিষয়ে জানা যায়ঃ
এর আগে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সকাল ১০টার দিকে সদর উপজেলার গান্ধীয়াশুর এলাকায়, ঘোনাপাড়া-টেকেরহাট আঞ্চলিক সড়কে গাছ ফেলে রাস্তা অবরোধ করে। এই অবরোধ তৈরি করা হয় এনসিপির পদযাত্রা ঠেকানোর জন্য বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী। এসময় পরিস্থিতি দেখতে আসা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও প্রশাসনের গাড়ি বহরে হামলা চালানো হয়। এতে একটি গাড়ির কাচ ভাঙে এবং ইউএনওসহ কর্মকর্তারা অল্পের জন্য রক্ষা পান।
পুলিশের গাড়িতে আগুন লাগার ঘটনার বিষয়ে জানানো হয়ঃ
সকালের আরও এক ঘটনায় গোপালগঞ্জ সদরের উলপুরে এনসিপি কর্মীদের পদযাত্রা রুখতে গেলে হামলা চালানো হয় পুলিশের গাড়িতে । গাড়িটিতে দুর্বৃত্তরা আগুন ধরিয়ে দেয় ও গারিটিতে ভাঙচুর চালায়। এতে একাধিক পুলিশ সদস্য আহত হন বলে জানা গেছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে উক্ত এলাকায়।
এনসিপি গত এক মাস ধরে তাদের ঘোষিত ‘জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচির মাধ্যমে সরকারবিরোধী শক্তি একত্রিত করার আহ্বান জানায়। তাদের অভিযোগ এই যে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে উক্ত কর্মসূচিকে দমন করার জন্য ধারাবাহিকভাবে বাধা দেওয়া হচ্ছে। এনসিপির শীর্ষ নেতারা এই বিষয়ে বলছেন, “এটি হচ্ছে জনগণের আন্দোলন, এটি কারও ব্যক্তিগত প্রচার নয়। অথচ শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির ওপর সরকারপক্ষের মদদপুষ্ট বাহিনী চড়াও হচ্ছে।”
অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ
হামলার পরপরই গোপালগঞ্জ সদর জুড়ে পুলিশের অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়। জেলা প্রশাসন ও পুলিশ সুপার জানান, “পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আমরা সর্বোচ্চ প্রস্তুত রয়েছি। যারা সহিংসতায় জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
(Tasin/DBN)