রাজধানীর মিরপুরের শিয়ালবাড়ি এলাকায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিহত প্রতিটি পরিবারের জন্য তাৎক্ষণিকভাবে এক লাখ টাকা করে অনুদান দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
আজ ১৪ অক্টোবর রোজ মঙ্গলবার দুপুরে রূপনগর এলাকায় থাকা একটি পোশাক কারখানা ও রাসায়নিক গুদামে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে ও অনেকজন গুরুতর আহত হয়েছে বলে জানা যায়।
জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান রাতেই ঘটনাস্থলে ছুটে যান । সেখানে কারখানার ক্ষতিগ্রস্ত অংশ শফিকুর রহমান ঘুরে দেখেন এবং সেখানে উপস্থিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী , প্রশাসন ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করেন। এর পাশাপাশি আহত ও নিহতদের বিষয়ে খোঁজখবর নেন ডা. শফিকুর রহমান ।এ সময় ঘটনাস্থলে তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা-১৪ আসনে দলীয় মনোনীত প্রার্থী ব্যারিস্টার মীর আহমাদ বিন কাসেম (আরমান), ঢাকা মহানগরী উত্তর জামায়াতের নায়েবে আমির আবদুর রহমান মুসা, এবং ঢাকা-১৬ আসনে প্রার্থী কর্নেল (অব.) আবদুল বাতেন।
নিহতদের পরিবারপ্রতি এক লাখ টাকা করে তাৎক্ষণিক অনুদান দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন,
“যারা এই দুর্ঘটনায় প্রিয়জন হারিয়েছেন, তাদের শোকের গভীরতা ভাষায় প্রকাশ করা কখনো সম্ভব নয়। তারা ছিলেন গরিব ও পরিশ্রমী মানুষ, পেটের দায়ে তারা কাজ করতে এসে জীবন দিয়েছেন। এই কঠিন সময়ে তাদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানো হচ্ছে আমাদের মানবিক দায়িত্ব।
তিনি জামায়াতের স্থানীয় নেতাকর্মীদের দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়াতে নির্দেশ দেন এবং বলেন, সরকার, সমাজের বিত্তবান ব্যক্তি, মানবিক সংস্থা ও সংগঠনগুলো এগিয়ে এলে এই পরিবারগুলোর কষ্ট কিছুটা লাঘব হবে।
এর আগে এক শোকবার্তায় জামায়াত আমির বলেন, রাজধানীর মিরপুরের পোশাক কারখানা ও রাসায়নিক গুদামে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১৬ জন শ্রমজীবী মানুষের মর্মান্তিক মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে শোকাহত। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।নিহতদের প্রতি আমি গভীর সমবেদনা জানাই এবং আল্লাহর কাছে দোয়া করি—তিনি যেন তাদের ক্ষমা করেন, শহীদের মর্যাদা দান করেন এবং জান্নাত নসিব করেন। আহতদের দ্রুত আরোগ্য দান করুন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারগুলোকে ধৈর্য ধারণের তৌফিক দিন।
তিনি অগ্নিকাণ্ডের প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানে নিরপেক্ষ তদন্ত পরিচালনা ও দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান। একই সঙ্গে নিহতদের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ এবং আহতদের সর্বাত্মক চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানান।
প্রসঙ্গত, রূপনগরের গার্মেন্টস প্রিন্টিং কারখানা ও রাসায়নিক গোডাউনে গত মঙ্গলবার সকাল ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে আগুন লাগে। এ খবর পাওয়া মাত্র ফায়ার সার্ভিসের প্রথম ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে ১১টা ৫৬ মিনিটে এবং সাথে সাথে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। পরে সেখানে যোগ দেয় আরও ১২টি ইউনিট । রাত পর্যন্ত আগুনে পুড়ে অন্তত ১৬ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে বলে জানান ফায়ার সার্ভিস।