আর কোনো সফটওয়্যার উইন্ডোজ ১০ অপারেটিং সিস্টেমের জন্য হালনাগাদ, নিরাপত্তা সংশোধনী বা কারিগরি সহায়তা দেবে না বলে জানিয়েছে মাইক্রোসফট। ফলে আজ ১৪ অক্টোবর রোজ মঙ্গলবার থেকে উইন্ডোজ ১০ অপারেটিং সিস্টেমে চলা কম্পিউটারগুলো ঝুঁকিতে পড়তে পারে সাইবার হামলার । তাই এই সমস্যা সমাধানে ব্যবহারকারীদের দ্রুত উইন্ডোজ ১১ অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি ।
মাইক্রোসফট এই বিষয়ে জানিয়েছে, উইন্ডোজ ১০ অপারেটিং সিস্টেমে চলা কম্পিউটারে ব্যক্তিগত ব্যবহারকারীরা ইচ্ছা করলে বিনা মূল্যে উইন্ডোজ ১১ ব্যবহার করতে পারবেন, তবে যত পুরোনো মডেলের কম্পিউটার গুলো রয়েছে, সেগুলোতে উইন্ডোজ ১১ ব্যবহার করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছে মাইক্রোসফট। সফটওয়্যার হালনাগাদ, নিরাপত্তা সংশোধনী বা কারিগরি সহায়তা বন্ধ হলেও উইন্ডোজ ১০ কম্পিউটার ব্যবহার করা যাবে, কিন্তু তা বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি করবে।
ইচ্ছে করলে এক্সটেন্ডেড সিকিউরিটি আপডেট সুবিধা নিতে পারবেন ইউরোপে বসবাসকারী উইন্ডোজ ১০ ব্যবহারকারীরা । তারা এর মাধ্যমে নতুন সুবিধা বা প্রযুক্তিগত কোনো সহায়তা পাবেন না তবে ২০২৬ সালের অক্টোবর পর্যন্ত নিরাপত্তা পাবেন। অন্য অঞ্চলের অর্থাৎ ইউরোপের বাইরে, ব্যক্তিগত ব্যবহারকারীদের এ সুবিধা পেতে হলে কম্পিউটারে সর্বশেষ সংস্করণের উইন্ডোজ ১০ থাকার পাশাপাশি মাইক্রোসফট অ্যাকাউন্ট এবং ব্যাকআপ সম্পন্ন থাকতে হবে।
অন্যথায় প্রতি কম্পিউটারের জন্য ৩০ মার্কিন ডলার খরচ করতে হবে। বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের জন্য এই খরচ প্রতি কম্পিউটারের জন্য ৬১ ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে এবং অঞ্চলভেদে এ পরিমাণ কিছুটা ভিন্ন হতে পারে।
মাইক্রোসফটের তথ্যমতে, বর্তমানে বিশ্বজুড়ে ১৪০ কোটি কম্পিউটারে উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করা হয়, যার মধ্যে প্রায় ৪৩ শতাংশই চলে উইন্ডোজ ১০-এ। ব্রিটিশ ভোক্তা নির্দেশিকা সংস্থা উইচের তথ্যানুযায়ী, যুক্তরাজ্যে এখনো দুই কোটিরও বেশি মানুষ উইন্ডোজ ১০ ব্যবহার করছেন।
সংস্থাটির সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, ব্যবহারকারীদের প্রায় এক-চতুর্থাংশ মাইক্রোসফটের সহায়তা বন্ধ হওয়ার পরও পুরোনো সংস্করণটি ব্যবহার চালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছেন, অন্যদিকে প্রতি সাতজনের একজন জানিয়েছেন, তারা নতুন কম্পিউটার কেনার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
ভোক্তা সংগঠনগুলো জানিয়েছে, মাইক্রোসফটের এই সিদ্ধান্তের ফলে অপ্রয়োজনীয় ব্যয় ও প্রযুক্তি বর্জ্যের পরিমাণ আরও বাড়বে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ভোক্তা অধিকার সংস্থা পিআইআরজির জ্যেষ্ঠ পরিচালক নাথান প্রোক্টর বলেন, ‘উইন্ডোজ ১০–এর সহায়তা বন্ধ করা ভোক্তা ও পরিবেশ দুয়ের জন্যই একটি বিপর্যয়। আমাদের এমন প্রযুক্তি প্রয়োজন, যা টেকসই ও দীর্ঘমেয়াদি।’