বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে ক্ষমতা প্রয়োগের সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে আরও ২ মাস (৬০ দিন) । এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন আজ ১৩ জুলাই রোজ রোববার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে রাষ্ট্রপতির আদেশে জারি করা হয়।
এই প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, দ্য কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর, ১৮৯৮-এর ধারা ১২(১) ও ১৭ অনুসারে সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন বা তদূর্ধ্ব পদমর্যাদার কর্মকর্তারা; যারা কোস্টগার্ড বা বিজিবিতে প্রেষণে রয়েছেন তারাও অন্তর্ভুক্ত আছেন, পরবর্তী ৬০ দিন পর্যন্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন।
এই ক্ষমতা সারা দেশে কার্যকর থাকবে।
যেসব আইনি ধারায় ক্ষমতা প্রয়োগ করা যাবে:
প্রজ্ঞাপনে ফৌজদারি কার্যবিধির (CrPC) ১৮৯৮ সালের নিম্নোক্ত ধারা অনুযায়ী ক্ষমতা প্রয়োগের অনুমতি দেওয়া হয়েছে:
গ্রেপ্তার ও পরোয়ানা সংক্রান্ত ক্ষমতা:
ধারা ৬৪: ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে কখনো অপরাধ ঘটলে তাৎক্ষণিক গ্রেপ্তার ও জামিন।
ধারা ৬৫: নিজ এলাকার বাইরে থেকেও কোনো সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ করা বা ওয়ারেন্ট।
ধারা ৮৩-৮৪: অন্য জেলার মধ্যে ওয়ারেন্ট কার্যকর করা এবং পুলিশকে নির্দেশ দেওয়ার ক্ষমতা থাকবে।
ধারা ৯৫: চিঠিপত্র, নথি ও বার্তা আদান-প্রদানে ডাক বা টেলিগ্রাফ কর্তৃপক্ষ ব্যবহার।
তল্লাশি ও উদ্ধার অভিযান:
ধারা ১০০: বেআইনি আটক ব্যক্তি উদ্ধারে যেকোনো জায়গায় তল্লাশি।
ধারা ১০৫: সরাসরি অনুসন্ধানের আদেশ ও সার্চ ওয়ারেন্ট ইস্যু।
জননিরাপত্তা ও শান্তি রক্ষায় ব্যবস্থা:
ধারা ১০৭: শান্তি বজায় রাখার জন্য নিরাপত্তার ব্যবস্থা।
ধারা ১০৯: ভবঘুরে বা সন্দেহভাজনের ভালো আচরণ নিশ্চিত করা।
ধারা ১১০: অভ্যাসগত অপরাধীর কাছ থেকে সদাচরণের মুচলেকা।
মুচলেকা বাতিল ও সমন জারি:
ধারা ১২৬: মুচলেকা বাতিল করে সমন বা গ্রেপ্তারি ওয়ারেন্ট জারি।
সমাবেশ নিয়ন্ত্রণ:
ধারা ১২৭: বেআইনি সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করার নির্দেশ।
ধারা ১২৮: পুলিশের সহায়তা নিয়ে সমাবেশ ভাঙার ক্ষমতা।
ধারা ১৩০: প্রয়োজনে সেনা কমান্ডারদেরও দায়িত্ব দেওয়া।
স্থানীয় উপদ্রব নিয়ন্ত্রণ:
ধারা ১৩৩: ক্ষেত্রবিশেষে স্থানীয় সমস্যার সমাধানে আদেশ।
ধারা ১৪২: জনউপদ্রব মোকাবিলায় তাৎক্ষণিক আদেশের ক্ষমতা।
মোবাইল কোর্ট পরিচালনার অধিকার
সেনা কর্মকর্তাদের এই ক্ষমতার আওতায় মোবাইল কোর্ট আইন, ২০০৯-এর অধীনে কার্যক্রম পরিচালনার সুযোগও রাখা হয়েছে।
এই আইন অনুসারে, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট: তার সামনে সংঘটিত কোনো অপরাধ ঘটলে তা তিনি তাৎক্ষণিকভাবে বিচার করতে পারেন। অভিযুক্ত ব্যক্তি স্বীকারোক্তি দিলে সঙ্গে সঙ্গে সাজা দিতে পারেন। সর্বোচ্চ ২ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা জরিমানার রায় দিতে পারেন। তবে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে গেলে সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের পূর্বানুমতি বা নিযুক্তি প্রয়োজন।
Tasin/DBN