১২ জুন ২০২৫:
আজ বৃহস্পতিবার পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে জেলে আবু সালেকের জালে ধরা পড়েছে বিরল প্রজাতির চারটি টিয়া মাছ (Parrot Fish)।মাছগুলো স্থানীয়ভাবে ‘টিয়া মাছ’ নামে পরিচিত হলেও এই মাছের বৈজ্ঞানিক নাম হচ্ছে স্কারাস জুফার (Scarus zufar)। আলীপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের খান ফিস আড়তে বেলা ১১টার সময় নিয়ে আসা হলে তা দেখতে উৎসুক জনতা ভিড় করেন ।
এই মাছ ধরার বিষয়ে জানা গেছে, চট্টগ্রামের বাঁশখালি থেকে আবু সালেক ‘আল্লাহর দোয়া-৪’ নামের একটি ফিশিং ট্রলার নিয়ে ১৭ জন জেলে নিয়ে সাগরে যান মাছ ধরার জন্য। বুধবার রাত্রিবেলা কুয়াকাটার উপকূল সংলগ্ন পায়রা বন্দরের শেষ বয়া এলাকায় মাছ ধরার সময় অন্যান্য সামুদ্রিক মাছের সঙ্গে ধরা পড়ে এই টিয়া মাছগুলো । জেলে আবু সালেক এই বিষয়ে জানান,
“এর আগে কখনো এই ধরনের মাছ আমাদের জালে ধরা পড়েনি বা দেখা যায় নি। আমরা মাছগুলোকে এই প্রথমবার দেখলাম। মাছগুলো দেখতে অনেকটা রঙিন টিয়ার মতো।’’
তিনি বড় পোয়া মাছের সঙ্গে মাছগুলোকে একত্রে নিলামে বিক্রি করেন। ৫ কেজি ওজনের মাছগুলো প্রতি কেজি ৫০০ টাকা দরে মোট ২,৫০০ টাকায় কিনে নেন চট্টগ্রামের পাইকারি মাছ ব্যবসায়ী আব্দুল্লাহ।
মাছগুলো দেখে আড়তে স্থানীয় মানুষজনের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে ব্যাপক কৌতূহল । রঙিন ও চওড়া ঠোঁটবিশিষ্ট এই মাছগুলোকে দেখার জন্য ভিড় করেন উৎসুক জনতা। খান ফিস আড়তের মালিক রহিম খান এই বিষয়ে জানান,
“একবার এরকম মাছ অনেক বছর আগে আড়তে এসেছিল, তবে সেগুলোর আকার ছিল অনেকটা ছোট। এবার যে মাছগুলো এসেছে, সেগুলোর আকার অনেকটাই বড় এবং আকর্ষণীয়।”
ক্রেতা আব্দুল্লাহ মাছগুলোর বিষয়ে জানান,
বরফ দিয়ে এই মাছগুলোকে সংরক্ষণ করা হয়েছে এবং শিগগিরই এই মাছগুলোকে চট্টগ্রামে পাঠানো হবে বিক্রি করার জন্য।
মাছগুলো ধরা পরার পর কলাপাড়া সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা এই বিষয়ে জানান,
“বাংলাদেশে এই মাছগুলো খুবই বিরল। এর বৈজ্ঞানিক নাম হচ্ছে স্কারাস জুফার, যা পরিচিত রয়েছে ধোফার প্যারটফিশ নামেও । এটি স্কারিডে (Scaridae) পরিবারের অন্তর্গত একটি সামুদ্রিক মাছ। এটি সাধারণত ওমানের দক্ষিণ উপকূলীয় অঞ্চলে মাঝে মাঝে এদের দেখা যায়।
সাধারণত এই মাছের রঙ হয়ে থাকে উজ্জ্বল নীল-সবুজ রঙের এবং এরা সর্বোচ্চ ৫২ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। এটি প্রথম ১৯৯৫ সালে শনাক্ত করা হয়েছিল। বাংলাদেশে এই মাছ ধরা পড়া একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈজ্ঞানিক ঘটনাও হতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
Tasin/DBN