গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে দেশ ছাড়েন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছাত্র-জনতার এ আন্দোলনের শুরু থেকেই জোরালো ভূমিকা পালন করেন অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। কখনো ফেসবুকে, কখনো দৃশ্যমাধ্যম শিল্পীসমাজের ব্যানারে আজমেরী হক বাঁধন রাজপথে দাঁড়িয়েছেন । তবে হাসিনা সরকারের পতনের পর ড. ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করলে বাঁধন দেশ নিয়ে আরো বড় প্রত্যাশা রাখেন তিনি।
তবে গত এক বছরে দেশের অনেক রাজনৈতিক পরিবর্তন ও সার্বিক পরিস্থিতি স্বপ্নভঙ্গ করেছে বাঁধনের । দেশের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে বাঁধন হতাশা প্রকাশ করেছেন । সম্প্রতি এক সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী এসব কথা বলেন । তার সাক্ষাৎকারে অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছরে প্রাপ্তি, অপ্রাপ্তি ও আশাভঙ্গের কথা জানায় বাঁধন।
কথোপকথনে বাঁধন জানান, “দেশে মব কালচার, নারীর প্রতি বিদ্বেষ বেড়েছে। দেশ নিয়ে স্বপ্ন হারাচ্ছে মানুষ।”
বাঁধন এই বিষয়ে বলেন,
“জুলাইয়ে যারা রাজপথে ছিলাম, একেকজন একেক ইস্যুতে মাঠে নেমেছে। আমি চেয়েছি সাম্যের বাংলাদেশ, মানুষের অধিকার ও ন্যায়বিচারের জন্য। এমন দেশ সবসময়ের চাওয়া। সেই জায়গা থেকে এটা ঐতিহাসিক সুযোগ ছিল বলে মনে করছি। কিন্তু সত্যি বলতে আমাদের প্রত্যাশাও হয়তো বেশি ছিল। আমরা একটা দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ। এ কারণে ভালো কাজ করা যে সহজে সম্ভব, তাও নয়।”
তিনি আরও বলেন,
“মব কালচার, নারীর প্রতি বিদ্বেষ। ভাস্কর্য ভাঙা হয়েছে। স্থাপনা ও মাজার ভাঙা হলো। সব মিলিয়ে আইনশৃঙ্খলাও হতাশার। এসব আসলে লজ্জার ও দুঃখের। যে স্বপ্ন দেখেছি, যে সুযোগ ছিল– সেটা হয়তো হারিয়েছি বলে মনে হয় এখন। সরকারের পারফরম্যান্স আমাকে অন্তত আনকমফোর্টেবল করেছে। ডিজহার্টেড (হতাশ) হয়েছি।”
দেশে ডানপন্থা রাজনীতির উত্থান হয়েছে এবং বাড়ছে নারীদের প্রতি বৈষম্য । এ প্রসঙ্গে বাঁধন বলেন,
“ডানপন্থা বলতে যা বুঝি, যারা এক্সট্রিমিস্ট বা একটা বিষয়ে অন্ধবিশ্বাসী। সেটা আগেও যে ছিল না তা নয়। যেমন হেফাজতে ইসলাম নামের একটি সংগঠন গঠন হয়েছিল। নারীদের অসম্মানের গল্প তো নতুন নয়। সাংস্কৃতিক বাধা নতুন নয়। এটা ছিলই। হয়তো এভাবে আমাদের কাছে পৌঁছায়নি। কিন্তু বিষয়গুলো হঠাৎ হয়নি। তবে আমি একদমই এসব একসেপ্ট করি না। আমি সম্পূর্ণ স্বাধীনতা চাই। প্রতিটি মানুষের অধিকার নিশ্চিত করতে চাই। বিপ্লবটা সেই আশাতেই করেছিলাম।”
Tasin/Digital Khobor

