২০২৪ সালের ১৭ জুলাই আমার জীবনের সেই দিন, যেদিন বেঁচে ফিরেছি শুধু শরীর নিয়ে, মন নয়।
সকালটা ছিল একেবারে স্বাভাবিক। মোবাইল হাতে নিয়ে খিলগাঁও থেকে রওনা হয়েছিলাম পল্টনের দিকে।
কিন্তু কিছুদূর এগোতেই বুঝলামএ পথ আর ফিরে যাওয়ার পথ নয়।
রাস্তাটা যেন রূপ নিয়েছে এক চলন্ত কবরখানায়।
চারদিকে শুধু লাশ… রক্ত… চিৎকার… আর ধোঁয়ার কুন্ডলি।
সাংবাদিক পরিচয় সেদিন আমার ঢাল হতে পারেনি।
পুলিশের লাঠি, কাঁদানে গ্যাস, রাবার বুলেট—সব পেরিয়ে আমি শুধু ছুটেছি সত্যের দিকে।
কারণ আমি জানি, কেউ না কেউ তো ইতিহাসকে লিখে যাবে।
আর সেই কেউটা আমি নিজেই হতে চেয়েছি।
একটা বাড়ির জানালা দিয়ে যখন রাস্তায় তাকিয়েছিলাম, মনে হয়েছিল এই শহরটা আজ আর মানুষ রাখে না, শুধু লাশ রাখে।
তবু থামিনি।
আমার সঙ্গে ছিল আরেক সাহসী সহযোদ্ধা—জান্নাতুর রহমান।
গুলির মাঝেও তার হাতে ছিল ক্যামেরা, চোখে ছিল আগুন।
আমি বলেছিলাম, ‘এগিয়ো না।’
সে বলেছিল, “সত্যকে পেছনে রেখে কেউ নিরাপদ থাকতে পারে না।”
সেদিনই বুঝেছি এই পেশা শুধু পেটের দায় নয়, আত্মার দায়িত্ব।
আমরা রাজপথে ছিলাম শুধু খবর তোলার জন্য নয় সময়ের সাক্ষ্য রাখার জন্য।
ভয়ে গা শিউরে উঠেছে, চোখে জল এসেছিল তবু পিছু হটিনি।
কারণ মৃত্যুর থেকেও বড় ভয় ভুলে যাওয়া।
আমরা দাঁড়িয়ে থেকেছি, যাতে কেউ ভুলে না যায়
এই সময়, এই কান্না, এই লাশের শহর।
লেখক : বিশেষ প্রতিনিধি, দৈনিক জনবাণী
বিশেষ লেখকঃ বশির হোসেন বাবু
Tasin/Digital Khobor