রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল ও কলেজ ক্যাম্পাসে একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে হতাহতের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। প্রতিবেদনে জানা গেছে ভয়াবহ এই দুর্ঘটনার কারণ। মূলত পাইলটের উড্ডয়নের ত্রুটির কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটে।
আজ ৫ নভেম্বর রোজ বুধবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে তদন্ত প্রতিবদনের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টা প্রেস সচিব শফিকুল আলম । এর আগে কমিটির সদস্যরা প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দেন একটি তদন্ত প্রতিবেদন ।

প্রেস সচিব বলেন, প্রধান উপদেষ্টার কাছে মাইলস্টোনে বিমান দুর্ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, মাইলস্টোন বিমান দুর্ঘটনা ঘটেছে পাইলটের উড্ডয়ন ত্রুটির কারণেই । যখন পাইলট প্রশিক্ষণের সময় ফ্লাই করছিলেন পরিস্থিতি তার আয়ত্তের বাইরে চলে যাওয়ার কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
গত ২১ জুলাই দুর্ঘটনা ঘটলে সেইদিনই প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গঠন করা হয় একটি তদন্ত কমিটি । এরপর আজ তদন্ত কমিটির প্রধান সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লে. জেনারেল এস এম কামরুল হাসান প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রতিবেদন জমা দেন ।
প্রেস সচিব এই বিষয়ে জানান, ১৫০ জনের সঙ্গে কথা বলেছে তদন্ত কমিটি; এর মধ্যে রয়েছেন এক্সপার্ট, ভুক্তভোগী , ইঞ্জিনিয়ারসহ আরও অনেকে। তারা সবার সঙ্গে কথা বলে উদ্ঘাটন করেন ১৬৮টি তথ্য । এর মধ্যে সুপারিশ করা হয়েছে ৩৩টি তথ্য। প্রতিবেদনে প্রধান সুপারিশ অনুযায়ী, এখন থেকে জননিরাপত্তার স্বার্থে বিমানবাহিনীর সব প্রাথমিক প্রশিক্ষণ পরিচালিত হবে ঢাকার বাইরে ।
তিনি আরও জানান, তদন্তে আরও পাওয়া গেছে, এই স্কুল রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) বিল্ডিং কোডের অনুমোদনে হয়নি। এই বিল্ডিংয়ে ন্যূনতম তিনটি সিঁড়ি থাকার কথা ছিল, সেখানে ছিল একটা সিঁড়ি মাঝ বরাবর। বিশেষজ্ঞ কমিটি বলছে, তিনটি সিঁড়ি থাকলে হতাহতের সংখ্যা আরও কম হতো।
এ ছাড়া সুপারিশে আরও বলা হয়, বরিশাল ও বগুড়ায় রানওয়ে সম্প্রসারণ করার কথা এসেছে। আজ মিটিংয়ে সেই নির্দেশনা দেওয়া হয়। রাজউকের বিল্ডিং কোড যাতে নতুন সম্প্রসারিত এলাকায় পালিত হয়, সে বিষয়ে নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে।
গত ২১ জুলাই দুপুরে প্রশিক্ষণ চলাকালে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান উত্তরার দিয়াবাড়ি এলাকায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বিধ্বস্ত হয়। দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় এই সামরিক বিমান দুর্ঘটনায় হতাহতদের বেশিরভাগই শিশু। এ দুর্ঘটনায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকসহ ৩৬ জন নিহতের তথ্য জানা যায়, আহত হয় শতাধিক।

