জনকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠানের অনুদানের নামে অর্থ আত্মসাৎ করার অভিযোগে শেখ হাসিনার ছেলে ও সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) চেয়ারম্যান সজীব আহমেদ ওয়াজেদ জয় এবং তার মেয়ে সায়মা হোসেন ওয়াজেদ পুতুলসহ মোট ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বুধবার (৫ নভেম্বর) দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এই মামলা রুজুর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে সংস্থাটির মহাপরিচালক আক্তার হোসেন নিশ্চিত করেছেন।
অনুমোদিত মামলায় অভিযুক্ত অন্য আসামিরা হলেন— শেখ রেহানার ছেলে ও ট্রাস্টি রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক, সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল, ট্রাস্টি ও সাবেক বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ (বিপু), এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর শাব্বির বিন শামস, সাবেক এনবিআর চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন ভূঁইয়া এবং সাবেক সদস্য (কর আপীল) রওশন আরা আক্তার।
অনুসন্ধান প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে জনকল্যাণের নামে প্রতিষ্ঠিত সিআরআই-এর অনুকূলে ২৩টি কোম্পানির কাছ থেকে ৪৫ কোটি ৩৫ লাখ ৯৫ হাজার টাকা অবৈধভাবে অনুদান হিসেবে সংগ্রহ করেন। একই সঙ্গে ২০১৩–১৪ অর্থবছর থেকে ২০২৩–২৪ অর্থবছর পর্যন্ত মোট ১০০ কোটি ৩১ লাখ ৪০ হাজার ৪৮৬ টাকা আয় করে প্রতিষ্ঠানটি।
অনুসন্ধানে আরও দেখা যায়, সিআরআই কর্তৃপক্ষ ২৯ কোটি ৫০ লাখ ৯৮ হাজার ৯৬ টাকা ব্যয়ের পরিমাণ দেখালেও হিসাব অনুযায়ী স্থিতিতে ১৫ কোটি ৬৮ লাখ ৫৯ হাজার ৫২১ টাকা আত্মসাৎ হওয়ার প্রমাণ মিলেছে।
এ ছাড়া সিআরআইয়ের নামে পরিচালিত ২৫টি ব্যাংক হিসাবে ২৪৭ কোটি ৮৫ লাখ ৩৬ হাজার ১৭০ টাকা জমা এবং ১৯১ কোটি ২১ লাখ ৪৩ হাজার ৩০৯ টাকা উত্তোলনসহ মোট ৪৩৯ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেন পাওয়া গেছে।
অন্যদিকে, ইনকাম ট্যাক্স অর্ডিন্যান্স ১৯৮৪ অনুযায়ী আইন ভঙ্গ করে ৩৬ লাখ ৫২ হাজার ৭৪২ টাকা আয়কর প্রদান না করে সরকারের ক্ষতি সাধন করা হয় এবং এই অর্থ স্থানান্তর, রূপান্তর ও বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে হস্তান্তর করে আত্মসাৎ হয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/১০৯ ধারা, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় মামলা রুজুর অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন।
সূত্র জানায়, অভিযুক্তরা ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধভাবে কর সুবিধা গ্রহণ, অনুদান আত্মসাৎ এবং অর্থপাচারের মাধ্যমে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রমাণ পাওয়া গেছে।

