এখন আওয়ামী লীগ একটি নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দল, এবং যে বা যারাই সরাসরি বা পরোক্ষভাবে তাদেরকে সহযোগিতা করছে, তারা অপরাধী হিসেবে বিবেচিত হবে বলে জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।
আজ ৫ জুলাই রোজ শনিবার আয়োজিত ‘জুলাই আন্দোলনের চেতনা বাস্তবায়নে করণীয়’ শীর্ষক এক বিতর্ক সভার অনুষ্ঠানে এসব মন্তব্য করেন তিনি । বক্তৃতায় তিনি বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতা, বিচারব্যবস্থা, সংবিধান এবং নির্বাচনের প্রসঙ্গসহ নানা বিষয়ে তুলে ধরেন তাঁর স্পষ্ট অবস্থান ।
আসাদুজ্জামান বলেন, “সব দল এখন আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ”, অ্যাটর্নি জেনারেল এমন মন্তব্য করে বলেন, “নিজেদের মধ্যে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব থাকলেও একটি জায়গায় সব দল একমত যে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে বাইরে রাখতে হবে।”
তিনি আরো বলেন,
“আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ একটি দল। এখন যেই ব্যক্তি বা গোষ্ঠী তাদেরকে সহায়তা করছে, তারা সরাসরি বা পরোক্ষভাবে দণ্ডযোগ্য অপরাধে জড়িত। তারা কোনোভাবে মানবতাবিরোধী কাজ করলে দল হিসেবেও বিচারের আওতায় আসা যায়।”
আসাদুজ্জামান আওয়ামী লীগের বিচার বিষয়ে বলেন, “আর কখনো নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দণ্ডিত ব্যক্তিরা । জনরোষ বা ‘মব জাস্টিস’ বিচারপতিদের বিরুদ্ধে কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। এটা বিচার বিভাগের ওপর অনাস্থা নয়, বরং এটি হচ্ছে বিগত ১৭ বছরের জমানো ক্ষোভ; যা সমীচীন নয়।”
তিনি স্পষ্ট করে বলেন, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়; সে সরকারের থাকুক বা সরকারের বিরোধীতে।
বক্তৃতায় ফ্যাসিজমের ফেরার আর কোনো আশঙ্কা নেই বলে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, “ফ্যাসিস্ট শক্তির পুনরুত্থানের আর কোনো আশঙ্কা নেই। এখন বাংলাদেশের জনগণ অনেক বেশি সচেতন।” তিনি আরও বলেন, আবু সাঈদের হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত বেক্তিরা বা জুলাইয়ের শহীদরা কোনো দলের প্রতিনিধি ছিলেন না, বরং তারা নাগরিক প্রতিনিধিত্ব করতেন এবং স্বৈরাচার বিরোধী চেতনার প্রতীক হয়ে উঠেছেন।
তিনি জুলাই আন্দোলনের চেতনার প্রসঙ্গে বলেন, “জুলাই আন্দোলনের মূল লক্ষ্য ছিল সুশাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা। এই আন্দোলন কোনো দলীয় আন্দোলন নয়, বরং একটি জনগণের নৈতিক ও সাংবিধানিক অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা সেই চেতনার কাছাকাছি এখনও যাইনি, তবে আমরা আগিয়ে যাচ্ছি সেদিকেই ।”
আসাদুজ্জামান বলেন, “নতুন করে সংবিধান লেখা যেতেই পারে। এতে আমি ব্যক্তিগতভাবে কোনো আপত্তি দেখি না। তবে, এটা মনে রাখা জরুরি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের রক্তের বিনিময়ে রচিত ৭২ সালের সংবিধান , এবং এখনো এটি বিশ্বের অন্যতম সেরা সংবিধান হিসেবে রচিত। বিতর্কিত সংশোধনীগুলো বাদ দিলে এটিকে আরও আধুনিক ও সময়োপযোগী করা সম্ভব।”
Tasin/DBN