স্পোর্টস ডেস্ক:
রাওয়ালপিন্ডিতে ৫ম দিনে খেলা মাঠে গড়ানো নিয়েই ছিল শঙ্কা। তবে পাকিস্তানের আবহাওয়া দপ্তরের বরাত দিয়ে কিংবদন্তি ক্রিকেটার রমিজ রাজা জানালেন ‘খেলা হবে’। এদিকে টেস্টে প্রথমবার পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করলো টিম টাইগার্স। শেষ দিন জয়ের জন্য ১৪৩ রান প্রয়োজন ছিল সফরকারিদের। শেষ পর্যন্ত ৬ উইকেট হাতে রেখেই জয় নিশ্চিত করে বাংলাদেশ।
১০ উইকেটের বিশাল জয় প্রথমবার বাংলাদেশকে এনে দিয়েছে টেস্টে পাকিস্তানকে হারানোর স্বাদ। এবার দ্বিতীয় টেস্টেও এলো অসামান্য জয়। দিনের শুরুতে দুই উইকেট হারালেও নাজমুল হোসেন শান্ত, মুমিনুল হক আর মুশফিকুর রহিমরা ঠিকই দলকে নিয়ে যান ১৮৫ রানের ল্যান্ডমার্কে।
চতুর্থ দিনে পেসারদের দাপুটে পারফরম্যান্সের পর জয় ছিল সময় আর ধৈর্য্যের ব্যাপার। ৫ম দিনের দ্বিতীয় সেশনে এলো সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। শেষ দিনে টাইগার ব্যাটারদের ধৈর্য্য আর ‘কমিটমেন্টে’র সুবাদে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো পাকিস্তানকে করেছে ধবলধোলাই। আবরার আহমেদের বলে চার মেরে বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত করেন সাকিব আল হাসান। পাকিস্তান ঘরের মাঠে নিজেদের ইতিহাসে মাত্র দ্বিতীয়বার এমন লজ্জার শিকার হয়েছে।
৫ম দিনে বাংলাদেশের ইতিহাস গড়তে দরকার ছিল ১৪৩ রান। আগের দিনের ৪২ রানের উদ্বোধনী জুটিতে এদিন আরও ১৪ রান যোগ করেছিলেন দুই ওপেনার। ১০ ওভারে পার করেন দলীয় ৫০। এরপর কিছুটা বিপত্তি। মীর হামজার বলে ব্যক্তিগত ৪০ রানে বোল্ড হয়ে ফেরেন জাকির। জীবন পেয়ে কাজে লাগাতে পারেননি আরেক ওপেনার সাদমান। খুররমের বলে মিডঅফে আলতো শট খেলতে গিয়ে ক্যাচ দেন শান মাসুদের হাতে।
দুই উইকেট পতনের পর অধিনায়ক নাজমুল শান্ত আর মুমিনুল খেলেন নিখুঁত টেস্ট ইনিংস। ভেজা আউটফিল্ডের কারণে শুরুতে খানিকটা সংগ্রাম করতে হলেও শেষ পর্যন্ত ঠিকই নিজেদের খুঁজে পান বাংলাদেশ ক্রিকেটের সাবেক ও বর্তমান অধিনায়ক। ২০ ওভার খেলে দুজন যোগ করেন ৫৭ রান। ম্যাচটা ততক্ষণে পাকিস্তানের নাগালের বাইরে চলে যায়।
মধ্যাহ্নভোজের পর অবশ্য শান্ত বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ৩৮ রান করে সালমান আঘার বলে শর্ট লেগে ক্যাচ দেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। দ্বিতীয় টেস্ট জিততে তখনো বাংলাদেশের প্রয়োজন ৫৮ রান।
শান্তর পর মুমিনুলও ফিরে যান দ্রুত। এরপর অবশ্য আর কোনো বিপত্তি ঘটেনি। দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার সাকিব ও মুশফিক বাংলাদেশকে নিয়ে যান জয়ের বন্দরে। এ জুটি এদিন যেন জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ার প্রতিজ্ঞা করেই নেমেছিলেন। সবার সম্মিলিত প্রয়াসে বাংলাদেশ পেল ঐতিহাসিক সিরিজ জয়।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
পাকিস্তান ইনিংস: ২৭৪/১৭২
বাংলাদেশ ইনিংস: ২৬২/ ১৮৫
ফল: বাংলাদেশ ৬ উইকেটে জয়ী। সিরিজে ২-০ ব্যবধানে জয়ী।
ম্যান অব দা ম্যাচ: লিটন কুমার দাস।
ম্যান অব দা সিরিজ: মেহেদী হাসান মিরাজ।