মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায় ঘোষণার আগমুহূর্তে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমর্থকদের উদ্দেশে পাঠানো এক অডিও বার্তায় দাবি করেছেন, অভিযোগগুলো মিথ্যা এবং তাকে রাজনৈতিকভাবে নিশ্চিহ্ন করতে চায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। রায় নিয়ে তার কোনো উদ্বেগ নেই এবং তিনি আবার জনগণের জন্য কাজ করবেন। খবর ভারতীয় গণমাধ্যমের।
আওয়ামী লীগ সভাপতি হাসিনা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায় ঘোষণার আগে পাঠানো অডিও বার্তায় দাবি জানান, নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আওয়ামী লীগকে ‘শেষ করে দিতে’ চাইছে। এত সহজ না এটা । শেকড় থেকে আওয়ামী লীগ উঠে এসেছে, কোনো ক্ষমতাদখলকারীর পকেট থেকে না।
তিনি জানান, প্রতিবাদের ডাক দেওয়ার পর দেশজুড়ে সমর্থকেরা যেভাবে সাড়া দিয়েছেন তা তাকে নতুন করে আশ্বস্ত করেছে।
হাসিনা তার ভাষায় জানান, আমাদেরকে তারা বিশ্বাস দিয়েছে। জনগণ এইসব দুর্নীতিবাজ, জঙ্গিবাদী ও খুনি ইউনূস আর তার দোসরদের দেখিয়ে দেবে কত দ্রুত ঘুরে বাংলাদেশ দাঁড়াতে পারে; জনগণই এর বিচার করবে।
গত বছর দেশজুড়ে সহিংসতায় রূপ নেওয়া বিক্ষোভের পর শেখ হাসিনা দিল্লিতে পালিয়ে যান এবং তার আগে পদত্যাগ করেন। এরপর ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেয় এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা শুরু করে। ঢাকায় আদালত হাজিরার নির্দেশ দিলেও তিনি তা অমান্য করেন।
সমর্থকদের উদ্দেশে হাসিনা বলেন, চিন্তা করার কিছু নেই। আমি বেঁচে আছি, বেঁচে থাকব, আবার মানুষের কল্যাণে কাজ করব, আর বাংলাদেশের মাটিতেই বিচার করব।
ইউনূসকে ক্ষমতা দখলের অভিযোগ করে তিনি বলেন, সংবিধান অনুযায়ী জোর করে নির্বাচিত প্রতিনিধিকে অপসারণ শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তার অভিযোগ, ইউনূস খুব পরিকল্পনা করে ঠিক এই কাজটাই করেছে।
তিনি দাবি করেন, গত বছরের ছাত্রবিক্ষোভে সরকার সব দাবি মেনে নিলেও একের পর এক নতুন দাবি তোলা হয়। তার ভাষায়, উদ্দেশ্য ছিল বিশৃঙ্খলা তৈরি করা।
তিনি মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগকে নাকচ করার কথা জানিয়ে বলেন, ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে আমি আশ্রয় দিয়েছি আর তারা আমাকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ কিভাবে দেয়?
হাসিনা অভিযোগ করে বলেন, ইউনূস সরকার পুলিশ, আওয়ামী লীগ কর্মী, আইনজীবী, সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব হত্যার দায়ে সাধারণ ক্ষমা দিয়েছে অভিযুক্তদের ।
তিনি বলেন, এভাবে সাধারণ ক্ষমা দিয়ে দায়টা সে নিজের কাঁধেই চাপিয়ে দিয়েছে। এই ক্ষমা ভুক্তভোগীদের পরিবারের জন্য বিচারপ্রাপ্তির পথ বন্ধ করে দিয়েছে । ‘কী ধরনের মানবতা এটা?’-প্রশ্ন রাখেন তিনি।

