এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন,“আওয়ামী লীগ সারাদেশে নৈরাজ্য এবং তান্ডব করার পরিকল্পনা করছে। সরকার এবং প্রশাসনের ভিতর থেকে তাদেরকে নানাভাবে সহযোগিতা করা হচ্ছে বলে আমরা শুনতে পেয়েছি। যারা জুলাই গণহত্যায় জড়িত ছিল। বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার হলো, তারা ছাড়া পেয়ে যাচ্ছে। পুলিশ কোন ধরনের ব্যবস্থাই নিচ্ছে না। যারা বৈষ্ণবিদী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিল এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির সাথে যারা যুক্ত রয়েছে তাদেরকে নানা ধরনের হুমকি ধামকি দেওয়া হচ্ছে। ফলে সরকারের কাছেও আমাদের এই আহ্বান থাকবে এবং আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে সেই রাজনৈতিক, সামাজিক প্রতিরোধ যাতে বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রাম থেকে তৈরি হয়। আমরা সে বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছি।”
আজ ১৯ সেপ্টেম্বর রোজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে শহীদ আবু সাঈদ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এক ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান নাহিদ ইসলাম।
তিনি আরও বলেন,
“যারা আওয়ামী লীগের দোসর রয়েছে, জাতীয় পার্টিসহ যে অন্যান্য সংগঠন রয়েছে, যারা ফ্যাসিবাদকে সমর্থন দিয়েছিল, জুলাই গণহত্যাকে সমর্থন দিয়েছিল, তাদের বিরুদ্ধে আমাদের রাজনৈতিক অবস্থান থাকবে। আমরা জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতাকর্মীদের বলেছি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিছু দালাল মিডিয়াতে জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতাকর্মী সম্পর্কে বিভিন্ন প্রোপাগান্ডা দেওয়া হয়। মিথ্যা তথ্য প্রচার করা হয়, সোশ্যাল মিডিয়াতে নানা গুজব এবং প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হয়। যারা চায় না যে একটি নতুন রাজনৈতিক শক্তির উত্থান ঘটুক।”
ভুয়া মিডিয়ার মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে এই গোষ্ঠীগুলো এনসিপির বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে উল্লেখ করে নাহিদ বলেন,
“তারা যাতে এ বিষয়ে সচেতন হয় এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যাতে সেই সমন্বিত নেটওয়ার্কটি জাতীয় নাগরিক পার্টির তৈরি করে। আমরা বলেছি যে দুর্নীতি বাংলাদেশের অন্যতম একটি সমস্যা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পরে অন্তর্বর্তী সরকার থেকে আমাদের প্রত্যাশা ছিল যে দুর্নীতি দূর হবে ।কিন্তু আমরা যতই সরকারের দিন পার হয়েছে দুর্নীতি আরো জেকে বসেছে। ফলে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাতীয় নাগরিক পার্টি যাতে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলে, সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলে , প্রত্যেকটা এলাকায় প্রত্যেকটা ইউনিয়নে উপজেলায় যে দুর্নীতি নতুন করে শুরু হয়েছে সেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে যাতে তারা জনগণকে সচেতন এবং ঐক্যবদ্ধ করে ।”
এই দুর্নীতি এবং মাফিয়া তন্ত্রের বিরুদ্ধে এনসিপির লড়াই চলমান থাকবে বলে উল্লেখ করেন নাহিদ। তিনি আরও বলেন,
“নতুন বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠার জন্য নতুন সংবিধানের জন্য জাতীয় নাগরিক পার্টি আগামী দিনে যে কর্মসূচি নিবে আমরা জুলাই পদযাত্রা যেরকম জেলাভিত্তিক জেলা সদরভিত্তিক কর্মসূচি নিয়েছিলাম এবার আমরা বলেছি আমরা উপজেলাভিত্তিক কর্মসূচি নিব আমরা”
নাহিদ ইসলাম আরও বলেন,
“আমরা প্রত্যেকটি উপজেলায় যাব এবং আমাদের অলরেডি উঠান বৈঠক নামে একটি কর্মসূচি চলমান আছে, গ্রাম এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে, আমরা এবার উপজেলাভিত্তিক কর্মসূচিতে যাব । এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির যে 24 দফা কর্মসূচি রয়েছে, যেই সেই 24 দফা কর্মসূচির প্রচারণা নিয়ে আমরা মানুষের দ্বারে দ্বারে আবারো আবারও যাব । অক্টোবরের মধ্যে আমাদের সাংগঠনিক কমিটি হবে এবং অক্টোবরের মধ্যে আমরা বাংলাদেশের প্রত্যেকটি উপজেলায় আবারও পৌঁছাবো এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির লক্ষ্য উদ্দেশ্য নিয়ে জনগণের কাছে যাব। সাম্প্রতিক যে আন্দোলন এবং রাজনৈতিক জোট বা একভূত হওয়া নিয়ে বিষয় সেই বিষয়ে আমরা স্পষ্ট করেছি।”
তিনি আরও বলেন,
“জাতীয় নাগরিক পার্টি তার লক্ষ্য উদ্দেশ্য নিয়েই এগোবে। কোন রাজনৈতিক গ্রুপ যদি মনে করে যে এই লক্ষ্য উদ্দেশ্যে তারা একমত তারা আমাদের সাথে আসতে পারে। এবং যেহেতু আমরা জামায়াত ইসলামের নেতৃত্বে যে আন্দোলনটা হচ্ছে যুগপথ আন্দোলন সে আন্দোলনের সাথে জাতীয় নাগরিক পার্টি নাই। অংশগ্রহণ করছি না। কারণ নিম্নকক্ষে আমরা পিআর চাই না। নিম্নকক্ষের পিআরের বিরুদ্ধে আমরা অবস্থান নিয়েছি। আমরা শুধু উচ্চকক্ষে পিআর এবং একটা জবাবদিহিতার জন্য একটি কার্যকর উচ্চকক্ষ চাচ্ছি। ফলে সেটাকে নিশ্চিত করে যাতে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করা হয়।”
Tasin/Digital Khobor