তারিখঃ ১৩ জুন ২০২৫, শুক্রবার |
স্থানঃ হোটেল ডোরচেস্টার, পার্ক লেন, লন্ডন
সময়ঃ বাংলাদেশ থেকে সময় দুপুর ২টা
বর্তমান বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও নির্বাসিত বিএনপি নেতা এবং দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে আলোচিত বৈঠকটি আজ অনুষ্ঠিত হয়েছে লন্ডনের অভিজাত হোটেল ডোরচেস্টারে । এ বৈঠককে অনেকে এই দেশের দীর্ঘ রাজনৈতিক অচলাবস্থা, রাজনৈতিক ক্ষমতার পালাবদল ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবির প্রেক্ষাপটের সম্ভাব্য মোড় ঘোরানো মুহূর্ত হিসেবে দেখছেন।
এ বৈঠককে কেন্দ্র করে যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে দেখা গেছে প্রবল উৎসাহ ও উদ্দীপনা। এই বৈঠককে অনেকে আখ্যায়িত করছেন “নতুন যুগের সূচনা” বলে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এ বিষয়ে বলেন,
“আমরা বিশ্বাস ও অনেক আশাবাদী যে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক অগ্রগতির জন্য ইতিবাচক কোনো বার্তা তাদের মধ্যকার এই আলোচনা থেকে উঠে আসতে পারে। দীর্ঘদিন ধরে দেশবাসী যে গঠনমূলক রাজনৈতিক সংলাপের অপেক্ষা করে আছেন, তার সূচনা হতে পারে এই আলোচনা।”
তাদের মধ্যকার আলোচনা নিয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী জানান,
“লন্ডনের দিকে আজ গোটা জাতি তাকিয়ে আছে। আমি বিশ্বাস করি যে, একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত হচ্ছে এই বৈঠক । নির্বাচনসহ রাজনৈতিক সংকটগুলোর শান্তিপূর্ণ সমাধান সম্ভব তাদের এই আলোচনার মাধ্যমেই ।”
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের পক্ষ থেকে এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের মধ্যেই আরেকটি আলোচিত সিদ্ধান্ত এসেছে । তিনি প্রত্যাখ্যান করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি ও যুক্তরাজ্যের এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের সাক্ষাৎ অনুরোধ । বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই প্রসঙ্গে উপদেষ্টা ইউনূস বলেন,
“এখন আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ চলমান। আমি কোনোভাবেই হস্তক্ষেপ করতে চাই না সেই আইনি প্রক্রিয়ায় । আমার পূর্ণ আস্থা আছে আদালতের ওপর । তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ যথাযথ কিনা তা তারা বিবেচনা করবেন ।”
তিনি সেখানে আরও জানান, কোনো ব্যক্তি পরিচয় বা রাজনৈতিক সম্পর্কের কারণে বিচার প্রক্রিয়ার ভারসাম্য নষ্ট হোক তা তিনি চান না।
ড. ইউনূসের সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন টিউলিপ সিদ্দিক। তিনি এক বিবৃতিতে বলেন,
“প্রমাণবিহীন, কাল্পনিক অভিযোগের ভিত্তিতে মিডিয়ার কাছে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ছড়ানো হচ্ছে, এবং সেই প্রতিহিংসার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন ড. ইউনূস। আমি আশা করি, এখন সংবাদমাধ্যমে তিনি আমার বিরুদ্ধে অপবাদ দেওয়ার অভ্যাস বন্ধ করবেন।”
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার দাবি জানিয়েছেন, গত এক দশকে অর্থপাচার হয়েছে প্রায় ২৩৪ বিলিয়ন ডলার , যার একটি বড় অংশই গিয়েছে যুক্তরাজ্যে । এই অভিযোগকে ঘিরে অন্তর্বর্তী সরকার যুক্তরাজ্য ভিত্তিক একাধিক আইনি সংস্থা ও আইনজীবী নিয়োগ করেছে, যারা পাচারের পথ, সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও ব্যক্তিদের চিহ্নিত করার জন্য কাজ করছেন।
Tasin/DBN