বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের বক্তব্যকে বিভ্রান্তিকর ও অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দাবি করে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। তিনি আরও জানান, আলালের বক্তব্যে কর্তৃত্ববাদী ও আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের সুর ধ্বনিত হচ্ছে। আমি তার এই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
গতকাল ১ নভেম্বর শনিবার জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ প্রতিবাদ করেন।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, শনিবার (১ নভেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক অনুষ্ঠানে ‘একাত্তরে গণহত্যা, ধর্ষণ ও নারকীয় হত্যাযজ্ঞের কারণে জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করতে হবে’ মর্মে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা জাতীয় ঐক্য বিনষ্টকারী, দায়িত্বজ্ঞানহীন ও অসৎ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তার এ ধরনের মন্তব্যে স্পষ্ট বোঝা যায়–তিনি কাউকে খুশি করার জন্য জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। তার বক্তব্যে কর্তৃত্ববাদী ও আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের সুর ধ্বনিত হচ্ছে। আমি তার এই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
মাওলানা আবদুল হালিম বলেন, জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’ বা ‘একাত্তরের হত্যাযজ্ঞে সম্পৃক্ততা’ সংক্রান্ত অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং রাজনৈতিক হীনমন্যতা থেকেই বিভিন্ন সময়ে কেউ কেউ এমন অভিযোগ করে থাকেন। স্বাধীনতার পর থেকে বিভিন্ন সময়ে দেশের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নিশ্চিহ্ন করার লক্ষ্যে জামায়াতকে টার্গেট করে এই ধরনের প্রপাগান্ডা চালানো হয়েছে। কিন্তু জাতি এখন এসব মিথ্যাচার সম্পর্কে সম্পূর্ণ সচেতন।
মাওলানা আবদুল হালিম আরও বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের একজন উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্বশীল অবস্থান থেকে মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের এ ধরনের বিভাজনমূলক বক্তব্য জাতীয় ঐক্যের পরিপন্থি। বর্তমানে যখন এই দেশের রাজনৈতিক সংকট উত্তরণ করার জন্য জাতীয় ঐকমত্য ও পারস্পরিক সহনশীলতার প্রয়োজন, তখন তার এই উসকানিমূলক মন্তব্য রাজনৈতিক শিষ্টাচার এবং জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার পরিপন্থি।
তিনি জানান, বাংলাদেশের একটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল হচ্ছে জামায়াতে ইসলামী , যার নীতি ও আদর্শ ইসলামী মূল্যবোধ, ন্যায়নীতি ও জনগণের কল্যাণের জন্য নিবেদিত। সর্বদা দেশের সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র রক্ষায় ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে আসছে জামায়াতে ইসলামী। অতএব, জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার দাবি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক, অগণতান্ত্রিক ও বিদ্বেষপ্রসূত।
ভবিষ্যতে জাতীয় ঐক্য ও বিভাজন সৃষ্টিকারী এবং বিদ্বেষপ্রসূত, বিভ্রান্তিকর ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বক্তব্য প্রদান করা থেকে বিরত থাকার জন্য আমি মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

